বিশ্বভরা প্রাণ

বিশ্বভরা প্রাণ

বিশ্বভরা প্রাণ গল্পের বই পড়তে তোমাদের কেমন লাগে? আর নাটক দেখতে? কেমন হয় যদি নাটকের চরিত্রগুলো মানুষ না হয়ে অন্যকিছু হয়? আর গল্পটা হয় এক্কেবারে তোমাদের নিজেদের? চলো দেখা যাক-

প্রথম সেশন

এই কিছুদিন আগেই তো তোমরা তোমাদের এলাকার সব প্রতিবেশীদের খুঁজে বের করলে (শিখন অভিজ্ঞতা ‘আমাদের যারা প্রতিবেশী’-র কথা মনে আছে নিশ্চয়ই)! এই প্রতিবেশীদের কেউ থাকে তোমাদের বাসার ভেতরেই (যেমন, ছোট্ট কিন্তু দারুণ পরিশ্রমী পিঁপড়া), কেউবা থাকে গাছের ডালে বাসা বেঁধে (যেমন, কর্কশ কণ্ঠের কিন্তু ভীষণ বুদ্ধিমান পাখি কাক), আবার কেউবা এক জায়গাতেই শেকড় ছড়িয়ে বসে ধ্যান করার ভঙ্গিতে জীবন পার করে দেয় (যেমন- স্কুলের পাশের বিশাল কোনো অশ্বত্থ গাছ)।

এখন ভেবে দেখো তো, এর বাইরেও এমন প্রতিবেশী কি আছে যাদের আমরা দেখতে পাই না? এই যেমন ধরো- আমাদের আশেপাশে, এমনকি আমাদের শরীরের মধ্যেই অসংখ্য অণুজীবের বাস, যেগুলো বলতে গেলে অদৃশ্য! কারণ খালি চোখে তাদের আমরা মোটেও দেখতে পাই না। বিশ্বভরা প্রাণ।

বিশ্বভরা প্রাণ

আমরা যাদের দেখি বা দেখি না, এই সবগুলোকে যোগ করে এবার প্রতিবেশীদের তালিকাটা আরও খানিকটা লম্বা করা যাক, কী বলো? না না, ভয় পেয়োনা, তোমাদের আবার অদৃশ্য ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে সপ্তাহখানেক ধরে পর্যবেক্ষণ করতে হবে না! বরং, এবার একটা মজার কাজ করা যাক সবাই মিলে। বিশ্বভরা প্রাণ।

এবার তোমাদের জন্য একটা গল্প দেওয়া আছে (‘জীব জগতের নেতা’), তবে এই গল্পের চরিত্রগুলো শুধু মানুষ নয়, বরং তোমাদের প্রতিবেশীদের কাউকে কাউকে খুঁজে পেতেও পারো এই গল্পে। গল্পের শেষে একটা চমক আছে, তবে সেটা এখুনি বলছি না! আপাতত তোমরা ক্লাসের সবাই কয়েকটা দলে ভাগ হয়ে যাও। তারপর দলের সবাই মিলে গল্পটা পড়ে নাও!

জীব জগতের নেতা

লেখা : মুহম্মদ জাফর ইকবাল

“খুক খুক!” একটা কাশি দিয়ে কথা শুরু করে বুড়ো বটগাছ, “বন্ধুগণ! আজ একটা বিশেষ উদ্দেশ্যে আমরা সবাই এখানে জড়ো হয়েছি।”

যারা এতক্ষণ উশখুশ করছিল তারা সবাই চুপ হয়ে যায়। খুব জরুরি নোটিশ দিয়ে পৃথিবীর সব জীবিত প্রাণীকে আজকের সভায় ডেকে আনা হয়েছে। ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে গাছপালা, পোকা- মাকড়, হাতি-গন্ডার সবাই আছে। তবে কেন সবাইকে ডাকা হয়েছে সেটা কেউ এখনো জানে না। বিশ্বভরা প্রাণ।

বটগাছ বলল, “বন্ধুগণ, আমাদের জীবিত প্রাণীদের মাঝে চরম বিশৃঙ্খলা। একজনের সঙ্গে আরেকজনের চরম হানাহানি। নিজেদের মাঝে ভালোবাসা নেই, সমন্বয় নেই। জলবায়ুর এতই পরিবর্তন হয়েছে যে যে কোনো মুহূর্তে পৃথিবীর প্রাণীজগত নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।

আমরা কীভাবে নিজেদের রক্ষা করব সেই ব্যাপারে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” বিশ্বভরা প্রাণ।হাতি বলল, “লাভ নাই। কেউ কারো কথা শুনবে না। সবাই নিজেদের মাঝে ঝগড়া ঝাটি করতে থাকবে।”

তেলাপোকা বলল, “আমাদের আসলে একজন নেতা দরকার। সবাই তাহলে সেই নেতার কথা শুনবে।” বানর বলল, “খাটি কথা। আমরা বানরেরা হলাম সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান, আমাদেরই তো নেতা হওয়া উচিত! এ নিয়ে এত আলোচনার কী আছে?”বিশ্বভরা প্রাণ সভায় যে মানুষটা ছিল, সে দাঁড়িয়ে বলল, “কিন্তু আমি জানতাম, আমরা মানুষেরা সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান।”

মানুষের কথা শেষ হতে না হতেই চারপাশ থেকে কিচমিচ, টিট্টিট, গড়গড়, ক্বা ক্বা, ঘেউ ঘেউ, ম্যাঁও ম্যাঁও করে সবাই প্রতিবাদ করে উঠে। সবাই বলতে থাকে, “কী বললে? মানুষ বুদ্ধিমান? মানুষ হচ্ছে সবচেয়ে বোকা। তাদের নির্বুদ্ধিতার কারণে পরিবেশের এই অবস্থা, তাদের কারণে আজ পৃথিবীর এত বড় সর্বনাশ!” বিশ্বভরা প্রাণ।

কথাটা সত্যি, মানুষটা তাই তাড়াতাড়ি মাথা নিচু করে বসে পড়ল। বানরটা বলল, “হ্যাঁ, যেটা বলছিলাম, সত্যিকারের বুদ্ধিমান প্রাণী হিসেবে নেতা হওয়ার যোগ্যতা আছে শুধু আমাদের—”

বাঘ দাঁত খিঁচিয়ে বলল, “তোমার মতো নেতা হলে বনে আর আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু থাকবে না!” বট এবার বাকিদের দিকে তাকিয়ে বলল, “আহহা! ঝগড়া বন্ধ করো তো দেখি। অন্যদের কথাও শুনি।” হঠাৎ একটা রিনরিনে কণ্ঠ ভেসে আসে, “আমি একটু কথা বলতে চাই…” বিশ্বভরা প্রাণ।

সবাই ডানে বামে তাকায়, কাউকেই দেখা যাচ্ছে না! সেই রিনরিনে গলা বলল, “আমাকে তোমরা দেখবে না। আমি ভাইরাস! আমাদের তুলনা শুধু আমরাই, তাই নেতা হলে আমাদেরই হওয়া উচিত! একেবারে জড়পদার্থের মতোই আমরা টিকে থাকি, কিন্তু তোমাদের কারও না কারো শরীরে ঢুকতে পারলেই আর আমাদের পায় কে?

তখন একের পর এক কোষ দখল করে নিই জ্যান্ত প্রাণীর মতোই! মানুষেরাও আমাদের ভয়ে কাবু হয়ে যায়! এই তো কদিন আগেই আমাদের করোনা ভাইয়েরা মানুষদের একেবারে বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে, সেটা ভুলে গেছ?” বিশ্বভরা প্রাণ।

সবাই হইচই করে উঠতেই আরেকটা অদৃশ্য কণ্ঠ সবাইকে থামিয়ে বলে ওঠে, “চেঁচামেচি করে লাভ নেই। ভাইরাস তো খুব ভুল কিছু বলে নি! প্রাণীরা সাইজে বড়সড় হলে কী হবে, ভেতরে ভেতরে সবাই তো ভীতুর ডিম! সাইজে তার থেকে বড় কিছু দেখলেই তো সব ঝেড়ে পালাও। আর আমার মতো ব্যাকটেরিয়াদের কথা ভাবো! বিশ্বভরা প্রাণ।

আমাদের ভাইবোনেরা সব প্রাণীর ভেতরে আছে, এমনকি মানুষের পেটের ভেতরে, তাদের মুখের ভেতরে, ত্বকের নিচে রীতিমতো পাড়ামহল্লা বানিয়ে থাকে। কোনো প্রাণী টেরটাও পায় না! সেদিক দিয়ে দেখলে তোমাদের উচিৎ আমাদের ব্যাকটেরিয়াদেরকেই নেতা হিসেবে মেনে নেওয়া!” বিশ্বভরা প্রাণ।

“এত তর্কাতর্কি বন্ধ করো তো!” বিরক্ত গলায় বাঘ বলে ওঠে, “আজীবন বনের রাজা ছিল বাঘ, এখন দেখি সবার নেতা হওয়ার শখ হয়েছে! পারলে এসে মারামারি করো তো আমার সঙ্গে! দেখি কে জেতে!” সভায় একটা চাপা গুঞ্জন শুরু হয়েছিল, বাঘের কথা শুনে সবাই একটু ভয় পেয়ে চুপ হয়ে যায়। “এইবার একটু আমাদের কথাও শোনো–” গাছের ডাল থেকে একটা পিঁপড়া বলতে শুরু করে, “তোমাদের সবার এই এক সমস্যা! খালি ঝগড়াঝাঁটি আর ঝগড়াঝাটি! বিশ্বভরা প্রাণ।

আমরা পিঁপড়ারা মিলেমিশে কত কাজ করি, সেটা দেখে একটু শিখলেও তো পারো! মানুষ এত বড়াই করে নিজেদের নিয়ে, অথচ আমরা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি পরিশ্রমী। বাঘের যে এত নেতা হওয়ার শখ, এক এলাকায় কয়েকটা বাঘ থাকলেই তো মারামারি শুরু হয়ে যায়, আর আমরা শত শত পিঁপড়া একসঙ্গে একটা পরিবারের মতো থাকি। মাটির নিচে আমরা যেভাবে শহর বানিয়ে থাকি, দেখলে তোমাদের সবার চোখ ট্যারা হয়ে যাবে!” বিশ্বভরা প্রাণ।

হুতুম প্যাঁচা অনেকক্ষণ ধরে বটগাছের কোটরে ঢুকে ঘুমানোর চেষ্টা করছিল। এত কথার আওয়াজে টিকতে না পেরে বাইরে এসে হাই তুলতে তুলতে বের হয়ে এসে বলল, “দ্যাখো অনেক হয়েছে! এবার একটু থেমে আমার কথা শোনো। বিশ্বভরা প্রাণ।

তোমরা যে যা-ই বলছ, সবার কথাতেই যুক্তি আছে। কিন্তু একটা জিনিস কি জানো, তোমরা কিন্তু সবাই সবকিছু দেখো মাটিতে দাঁড়িয়ে। শত্রু একেবারে কয়েক হাতের মধ্যে চলে না এলে তোমরা টেরটাও পাও না! অথচ পাখিরা কিন্তু উপর থেকেই সব দ্যাখে। বিশ্বভরা প্রাণ।

বিশেষ করে আমাদের মতো প্যাঁচারা—আমরা একেবারে নিঃশব্দে রাতের আকাশে ঘুরে বেড়াই, কোথায় কী ঘটছে আমাদের চেয়ে বেশি কেউ জানেনা। তাই নেতা হলে আমাদেরই হওয়া উচিৎ, কোনো বিপদ আপদ এলে আমরাই সবার আগে টের পাব ।

প্যাঁচার কথা শেষ হতে না হতেই আবার সভায় একটা হইচই শুরু হয়ে যায়। বটগাছ একটু গলা খাঁকারি দিয়ে সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করল, তবে বিশেষ লাভ হলো না। হতাশ গলায় বট গাছ তখন নিজেই বলতে শুরু করে, “থামো তো সবাই! এই যে বাঘ, পিঁপড়া, প্যাঁচা সবাই এতক্ষণ ধরে এত বড় বড় কথা বলছ, তোমরা কেউই তো নিজে নিজে খাবারটাও তৈরি করতে পারো না! অন্য জীবকে মেরে খেতে হয় তোমাদের। বিশ্বভরা প্রাণ।

নিজমুখে নিজের কথা বলতে একটু লজ্জাও লাগে, তাও না বলে পারছি না। আমরা তোমাদের মতো অন্য জীবদের খেয়ে বাঁচি না, বরং একটু রোদ, পানি, বাতাস পেলে নিজের খাবার নিজেই তৈরি করে নিই। তাই নেতা যদি কেউ হয় তাহলে গাছেদের মধ্য থেকেই কারও হওয়া উচিৎ…” বট গাছ কথা শেষ করার আগেই সব জীব চিৎকার করতে থাকে, “স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত! মানি না! মানবো না!” সভায় প্রচণ্ড হইচই, গোলমাল।

তখন মানুষটা ভয়ে ভয়ে দাঁড়িয়ে বলল, “তোমরা যদি অনুমতি দাও, তাহলে আমি একটা কথা বলতে পারি।“

ব্যাঙ বলল, “যা বলতে চাও তাড়াতাড়ি বলে ফেলো।”

মানুষ বলল, “আমরা মানুষেরা নেতা ঠিক করার জন্য একটা কাজ করি। সেটাকে বলে নির্বাচন। সবাই যদি গোপন ব্যালট দিয়ে একজন নেতা ঠিক করে ফেলি, সেটা হবে সবচেয়ে ভালো।” বিশ্বভরা প্রাণ।

টিকটিকি বলল, “ঠিক ঠিক ঠিক!”

ব্যাঙ বলল, “নির্বাচন চাই! নির্বাচন!”

অন্য সব প্রাণীও বলল, “হ্যাঁ, হ্যাঁ। নির্বাচন করেই আমরা আমাদের নেতা ঠিক করব।”

তারপর জীব জগতে নির্বাচন নিয়ে মহা উত্তেজনা। চারিদিকে মিটিং মিছিল। পোস্টার, ফেস্টুন আর ব্যানারে সব ঢেকে গেল। শ্লোগানে

র শব্দে কেউ রাতে ঘুমাতে পারে না।

একদিন মহা ধূমধামে নির্বাচন হলো। রাত জেগে সবাই মিলে ভোট গুণতে শুরু করল। সবার ভেতরে উত্তেজনা, কে হবে বিজয়ী? কে হবে জীব জগতের নেতা?

একসময়য় ভোট গণনা শেষ হলো। দেখা গেল বিজয়ী হয়েছে

(দেখতেই পাচ্ছ গল্পটা এখানে শেষ হয়নি। এর পরে কী ঘটবে? কে জিতবে নির্বাচনে? আর তারপর?

এই গল্পের পরের অংশে আর কী কী ঘটবে তা ঠিক করবে তোমরাই!)

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

পড়া হয়ে গেছে? তাহলে তো প্রথম চমকটাও জেনে গেছ! হ্যাঁ, এই গল্পটা অসমাপ্ত; আর গল্পের শেষটা ঠিক করবে তোমরাই! তবে তার আগে একটু নিজে নিজে গল্পের চরিত্রগুলো নিয়ে ভাবো। তোমার মতে নির্বাচনে কে জিতবে? সে কী ধরনের জীব? কী খায়? কোথায়

থাকে? চিন্তা করে ঝটপট নিচের ফাঁকা জায়গায় তোমার চিন্তাগুলো লিখে ফেলো। কোনো প্রশ্নের উত্তর না জানলে চিন্তা করো না, আপাতত অনুমান করেই লিখতে পারো। পরে মিলিয়ে নিও অনুমান সঠিক কিনা—

নির্বাচনে জিতবে কে?
সে কী ধরনের জীব?
তার সম্পর্কে কী কী জানো? সে কী খায় বা কোথায়থাকে?
এই চরিত্রটি কেন ভোটে জিতবে বলে তোমার মনেহলো?

গল্পের শেষটা পরে ভাবা যাবে। আগে দেখো তোমার বন্ধুদের সঙ্গে তোমার চিন্তা মিলে গেল কিনা দলের বাকিদের সঙ্গে গল্পটা নিয়ে একটু গল্প করা যাক তাহলে?

দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ সেশন

আগের সেশনে তোমরা তো গল্পটা নিয়ে আলাপ করলে। এখন একটু গল্পের সবগুলো চরিত্র খুঁটিয়ে দেখা যাক। আগের গল্পের মোট চরিত্র কয়টি এবং কোনটা কোন ধরনের জীব (উদ্ভিদ/ প্রাণী/ অণুজীব) নিচে লিখে রাখো—

চরিত্রের নামকোন ধরনের জীব?
চরিত্রের নামকোন ধরনের জীব?

কোন ধরনের জীব?

এবার এদের সম্পর্কে আরেকটু জেনে নেওয়া যাক। তোমাদের বিজ্ঞান বইয়ের চতুর্থ অধ্যায়ের উদ্ভিদ ও প্রাণী অংশটুকু তোমরা তো আগেই পড়েছ। এখন সেখানে আরেকবার চোখ বুলিয়ে নাও। এবার একই অধ্যায়ের অণুজীব অংশটা পড়ে নেওয়া দরকার। অণুজীব বলতে চট করে আমরা ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া ধরে নিই, কিন্তু প্রকৃতিতে যে কত অজস্র রকমের অণুজীব আছে কল্পনা করতে পারবে না। বিশ্বভরা প্রাণ।

এই অধ্যায়ে সেগুলো সম্পর্কে ইন্টারেস্টিং সব তথ্য পাবে। দলের সবাই একসঙ্গে বসে এই অংশগুলো নিজে পড়ো, না বুঝলে অন্যদের সাহায্য নাও। দলের কারও কোনো জায়গায় বুঝতে সমস্যা হলে তুমিও সাহায্য করো। আর কোনো কিছু বুঝতে বেশি অসুবিধা হলে তোমাদের শিক্ষক তো আছেনই!

← প্রাণী, উদ্ভিদ, অণুজীব সম্পর্কে অনেক অনেক তথ্য জেনে গেছ তোমরা! গল্পের সবাই কিন্তু তর্ক

করছিল কে কী খেয়ে বেঁচে থাকে, কে নিজের খাবার নিজেই তৈরি করতে পারে- এসব নিয়ে। গল্পটা তাই শেষ করার আগে এই বিভিন্ন ধরনের প্রাণীরা কীভাবে খাওয়া দাওয়া করে সে বিষয়েও একটু পড়ালেখা করে নেওয়া জরুরি, তাই না? তোমাদের বইয়ের ত্রয়োদশ অর্থাৎ ‘জীবের পুষ্টি ও বিপাক’ অধ্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা আছে। একটু সময় নিয়ে ওই অধ্যায়টাও পড়ে নেওয়া যাক তাহলে! শিক্ষক সাহায্য করবেন যদি কোথাও বুঝতে সমস্যা হয়।

অনেক তো পড়ালেখা হলো, এবার গল্পে ফিরে যাওয়া যাক। দলের সবাই আলোচনা করে দেখো, গল্পটা কীভাবে শেষ হতে পারে? সবার মাথায় যা যা আইডিয়া আসে সেগুলো নিয়ে আলাপ করে গল্পের শেষটা দাঁড় করাও।

গল্পের শুরুটা এক হলেও যেহেতু প্রতিটি দলই তাদের নিজেদের আইডিয়া থেকে গল্পটা শেষ করেছে, শেষ পর্যন্ত প্রতিটি দলের গল্পই তো হবে একেবারে আলাদা, তাই না? কত্তগুলো নতুন নতুন গল্প লেখা হয়ে গেল ভাবো তো!

এবার দ্বিতীয় চমক— গল্পটা দিয়ে একটা নাটক করলে কেমন হয়? তোমার দলের সবাই মিলে আলাপ করে নাও কে কোন চরিত্রে অভিনয় করবে। এই আলোচনা ক্লাসের বাইরেও করতে পারো । আবার দলের সবাইকেই শুধু অভিনয় করতে হবে এমন কোনো কথা নেই কিন্তু। সবাই আলোচনা

বিজ্ঞান

করলেও নাটকের পরের অংশের সংলাপগুলো কাউকে না কাউকে তো লিখতে হবে। আবার ধরো, যারা বিভিন্ন চরিত্র সাজবে, তাদের পোশাকের নকশাও কাউকে না কাউকে করতে হবে! পোশাক নিয়ে ভাবছ? এ তো খুবই সহজ! কাগজে রং করে বা পোস্টার কাগজ ব্যবহার করে সবগুলো চরিত্র এঁকে বা বানিয়ে নিয়ে অভিনেতাদের গায়ে সেঁটে দিলেই হলো!

মনে রেখো, অনেকগুলো দল যেহেতু অভিনয় করবে, খুব বেশি সময় নিয়ে নিয়ো না আবার! প্রতিটি দল পাঁচ থেকে সাত মিনিটের একটা নাটক মঞ্চস্থ করবে, এভাবেই প্রস্তুত হও।

পঞ্চম সেশন

সবাই নিশ্চয়ই স্কুলে, বাড়িতে অনেক প্রস্তুতি নিয়ে এসেছ নাটকের! আজকের সেশনে একে একে সব দলের নাটক মঞ্চস্থ হবে। তোমার দলের কে কোন ভূমিকা পালন করেছ তা নিচে লিখে রাখো। শুধু অভিনেতা নয়, সংলাপ লেখা থেকে শুরু করে অন্যান্য কাজ কে কোনটা করেছে সেটাও লিখে রাখতে ভুলো না ।

দলের সদস্যদের নামদলীয় নাটকে যে ভূমিকা ছিল (অভিনয় করলে কোন চরিত্রে অভিনয় করেছে সেই নামসহ লেখো

ফিরে দেখা

সব দলের নাটক তো দেখলে, কোন গল্পটা তোমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে? কেন?

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

কাদের অভিনয় সবচেয়ে সুন্দর ছিল? আজকের অনুষ্ঠান নিয়ে তোমার অনুভূতি নিচে টুকে রাখো-

………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………

আরো পড়ুন : পানির সঙ্গে বন্ধুতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: এই কনটেন্ট কপি করা যাবেনা! অন্য কোনো উপায়ে কপি করা থেকে বিরত থাকুন!!!