বর্তমান সময় ভাইরাসের মত প্রভাব বিস্তার করছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ। ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এই ফেক নিউজ বা ভুয়া খবর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। আজকে আমরা জানবো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন অ্যাপে গুজব বা ভুয়া খবর কিভাবে ছড়ায়।
আমাদের ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ক আয়োজনের অংশ হিসেবে গতপর্বে আমরা জেনেছি ফেসবুক ব্যবহারের সাইবার ঝুঁকি এবং নিরাপদ থাকার উপায় সম্পর্কে। ধারাবাহিক আয়োজনে অংশ হিসেবে আপনি আজ জানবেন ভুয়া খবর সামাজিক মাধ্যমে কিভাবে ছড়ায় এবং কি রকম প্রভাব বিস্তার করে। তাহলে চলুন শুরু করা যাক-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর, গুজব বা ফেক নিউজ চেনার উপায়

মুঠোফোন, ইন্টারনেট আর ফ্রি সোশ্যাল মিডিয়ার এই যুগে জটিল এক সমস্যার নাম- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর, গুজব বা ফেক নিউজ।
যেকোনো আলোচিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে বস্তুনিষ্ঠ খবরের মাঝে দুই একটা ভুয়া খবর ভাইরাল হওয়া এখন আর নতুন কিছু নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতার অংশ হিসেবে ভুয়া খবর, গুজব বা ফেক নিউজ চিহ্নিত করণ খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।
ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ কি?
সাম্প্রতিক কালে সােশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে ব্যক্তিগত, দলীয় বা রাজনৈতিক স্বার্থে রাতারাতি জনসমর্থন অর্জন, সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছড়ানাে, সামাজিক অস্থিতিশীলতা তৈরি কিংবা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবার উদ্দেশ্যে যেসব অতিরঞ্জিত, পক্ষপাতমূলক ও ভ্রান্ত তথ্যবহুল প্রচারণা চালানাে হচ্ছে তাই ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর কিভাবে ছড়ায়?
মূলত চারটি উপায়ে এই ভুয়া খবরগুলাে ছড়িয়ে থাকে- ১. ফেসবুক, ২. ইউটিউব, ৩. ভুয়া ওযেবসাইট এবং ৪. গণমাধ্যম।
সাধারণত সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে প্রকাশিত উত্তেজনাপূর্ণ বা উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস বা ছবি বা ভিডিওগুলাে ইউজারদের লাইক, কমেন্ট ও শেয়ারের কারণে রাতারাতি ভাইরাল হয়ে যায়।
আবার অনেক গণমাধ্যম দ্রুত ভিউয়ার বাড়াতে এসব সামাজিক মাধ্যমের তথ্য যাচাই বাছাই না করেই খবর প্রকাশ করে। এরপরে ঐ গণমাধ্যমের খবরের সূত্রধরে অল্প সময়ের মধ্যেই চক্রবৃদ্ধিহারে সর্বসাধারণের মধ্যে ভুয়া খবরটি ছড়িয়ে পরে।

ভুয়া খবর ছড়ানাের কারণ
ভুয়া খবর ছড়ানাের পেছনে মূলত তিনটি কারণ সাধারণত চিহ্নিত করা হয়। যেমন-
১. রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা,
২. ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানাে/ সাম্প্রদায়িক বিদ্বেশ ছড়ানাে/ সামাজিক অস্থিতিশীলতা তৈরি করা,
৩. অসৎ উপায়ে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া;
ভুয়া খবরের প্রভাব বা ফলাফল
অনেক দেশেই সাম্প্রদায়িক হামলা, দাঙ্গা, হত্যা এমন অনেক কিছুর জন্য দায়ী ফেইসবুকে বা অন্যান্য সামাজিক যােগাযােগের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেযা ভুয়া খবর। বাংলাদেশেও গত কয়েক বছরে এমন বেশ কিছু ঘটনা ঘটেছে যার উৎস ফেইসবুকে কোন মন্তব্য অথবা ছবি রাতারাতি ছড়িয়ে পরা বা ভাইরাল হয়ে যাওয়া।
অনেক ক্ষেত্রে সেসব ছবি বা মন্তব্যের সত্যতা নিযেই প্রশ্ন ওঠার আগেই যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাই বাংলাদেশে বেশি ঘটেছে। এরমধ্যে রয়েছে,
১. কক্সবাজারের রামুর বৌদ্ধ মঠে ভাঙচুর,
২. রংপুরের গঙ্গাচড়ায় সাম্প্রদায়িক হামলা,
৩. ব্রাহ্মনবাড়িয়ার নাসির নগরের হিন্দু মন্দিরে হামলা,
৪. শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে হতাহতের সংখ্যা এবং
৫. সবশেষ ঝিগাতলায় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাগুলাে।
সরকার এরইমধ্যে ‘গুজব শনাক্তকরণ সেল’ গঠন করলেও ভুয়া খবর ঠেকাতে শুধু আইনের কড়াকড়ি যথেষ্ট নয বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। ভুয়া সংবাদ প্রতিরােধে সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহারে সকলের সচেতনতা ও দায়িত্বশীল আচরণের কোন বিকল্প নেই।
নিচের ভিডিওতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ যেভাবে ছড়ায় তা জেনে নিন-
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর বা ফেক নিউজ যেভাবে ছড়ায়: এই তথ্যটি কোনো প্রকার ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয় বরং জনগণের কল্যাণে বহুল প্রচারের লক্ষ্যে অধ্যয়ন ডট কম এর পাঠকদের সুবিদার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। এটি সরাসরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সূত্র থেকে সংগৃহিত। এতে কারও কোনো আপত্তি থাকলে রিমুভ করার অনুরোধ করতে পারেন: [email protected] অথবা সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
অধ্যয়ন ডট কম এর সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেইজটি লাইক ও ফলো রাখুন এবং ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। প্রতিদিন শিক্ষা সংক্রান্ত সকল তথ্য পেতে আমাদের দৈনিক শিক্ষা ক্যাটাগরি দেখুন।