প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা এখানে শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন নিয়ে আলোচনা করবো যা সপ্তম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার (শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন) শিখন অভিজ্ঞতাগুলো থেকে যতটুকু শেখা হয়েছে সেগুলো লিখতে হবে আমাদের।
সপ্তম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রথম সামষ্টিক মূল্যায়ণ কার্যক্রমের প্রথম কাজ এটি। এরপর ধারাবাহিকভাবে আরও ৪টি কাজ করতে হে সেগুলো আমরা পর্যায়ক্রমে আলোচনা করবো।
শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ
নিচে তোমাদের জন্য ৭ম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বইতে উল্লেখিত শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ দেওয়া হল-
১. দৃশ্যমান শিল্পকলা বা ভিজুয়াল আর্ট
২. প্রদর্শনী শিল্পকলা বা পারফর্মিং আর্ট
৩. সাহিত্য শিল্প
৪. শ্রবণ শিল্প
বিভিন্ন শিল্পকলার সংজ্ঞা, উপাদান ও নিয়ম-কানুন
এবার আমরা সপ্তম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর এর আলোকে বিভিন্ন শিল্পকলার সংজ্ঞা, উপাদান ও নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জেনেছি সেগুলো জানবো।
১. দৃশ্যমান শিল্পকলা বা ভিজুয়াল আর্ট

সংজ্ঞা: শিল্পকলার এই শাখায় দৃশ্যমান বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে অঙ্কন, পেইন্টিং, ভাস্কর্য, প্রিন্টমেকিং, ফটোগ্রাফি, সিরামিক এবং স্থাপত্য ইত্যাদি। দৃশ্যমান শিল্পকর্মের নান্দনিকতা, ফর্ম এবং দৃশ্যমান অভিব্যক্তির উপর নির্ভর করে।
উপাদান: দৃশ্যমান শিল্পকলা বা ভিজুয়াল আর্ট এর উপাদানসমূহ হল- ক. লাইন, খ. আকৃতি, গ. গঠন, ঘ. রঙ, ঙ. টেক্সচার, চ. স্থান;
নিয়ম-কানুন: যদিও ভিজ্যুয়াল আর্টে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই যা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে, সেখানে কিছু নীতি এবং নির্দেশিকা রয়েছে যা শিল্পীরা প্রায়শই দৃশ্যত আকর্ষণীয় এবং প্রভাবশালী শিল্পকর্ম তৈরি করতে বিবেচনা করে।
এই নীতিগুলি শিল্পের উপাদানগুলিকে সংগঠিত করতে এবং রচনাকে পরিচালনা করতে সহায়তা করে। এখানে ভিজ্যুয়াল আর্টের কিছু সাধারণভাবে স্বীকৃত নিয়ম বা নীতি রয়েছে:
ক. ভারসাম্য, খ. বৈপরীত্য, গ. জোর দেওয়া, ঘ. নড়াচড়া, ঙ. প্যাটার্ন, চ. অনুপাত, ছ. ঐক্য;
শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন
২. প্রদর্শনী শিল্পকলা বা পারফর্মিং আর্ট

সংজ্ঞা: দর্শকদের সামনে উপস্থাপন করা হয় এমন শিল্পকর্মের নাম প্রদর্শনী শিল্পকলা। এই বিভাগে সঙ্গীত, নৃত্য, থিয়েটার এবং গীতিনাট্য অন্তর্ভুক্ত। প্রদর্শনী শিল্পকলায় শৈল্পিক অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য শরীর, কণ্ঠস্বর এবং চলনকে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
উপাদান: প্রদর্শনী শিল্পকলা বা পারফর্মিং আর্ট এর উপাদান সমূহ হল- ক. শরীর, খ. স্বর, গ. চলন, ঘ. স্থান, ঙ. সময়, চ. শব্দ, ছ. পাঠ্য, জ. আলো বা লাইটিং;
নিয়ম-কানুন:
যদিও পারফরমিং আর্টের কোন কঠোর নিয়ম নেই যা শিল্পীদের অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে, সেখানে কিছু নীতি এবং নির্দেশিকা রয়েছে যা পারফরম্যান্সের গুণমান এবং প্রভাবকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
এই নির্দেশিকাগুলি সৃজনশীলতাকে সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়, বরং বাধ্যতামূলক এবং আকর্ষক পারফরম্যান্স তৈরি করার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করার জন্য। এখানে কিছু সাধারণভাবে স্বীকৃত নিয়ম বা পারফর্মিং শিল্পের নীতি রয়েছে:
ক. প্রস্তুতি, খ. অভিব্যক্তি, গ. যোগাযোগ, ঘ. সহযোগিতা, ঙ. টাইমিং, চ. মঞ্চ উপস্থিতি, ছ. অভিযোজনযোগ্যতা, জ. নৈপুণ্যের প্রতি শ্রদ্ধা;
শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন
৩. সাহিত্য শিল্প
সংজ্ঞা: শৈল্পিক অভিব্যক্তির মাধ্যম শিল্পের যে শাখায় লিখিত বা কথ্য ভাষাকে ব্যবহার করা হয় তাই সাহিত্য শিল্প। এর মধ্যে রয়েছে কবিতা, উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, প্রবন্ধ এবং সাহিত্য। সাহিত্য শিল্পগুলি ভাষার শক্তি, গল্প বলার এবং সাহিত্যের কৌশলগুলি নিয়ে কাজ করে।
উপাদান: সাহিত্য শিল্প, সাহিত্য নামেও পরিচিত, লিখিত বা মৌখিক কাজের বিভিন্ন রূপকে অন্তর্ভুক্ত করে যা ভাষাকে প্রকাশের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।
সাহিত্য শিল্পের উপাদানগুলি হল মৌলিক উপাদান যা একটি সাহিত্যকর্ম তৈরি করে এবং এর গঠন, অর্থ এবং শৈল্পিক মূল্যে অবদান রাখে। এখানে সাহিত্য শিল্পের মূল উপাদানগুলি রয়েছে: ক. পটভূমি, খ. চরিত্র, গ. বিন্যাস, ঘ. থিম, ঙ. ভাষা, চ. শৈলী, ছ. স্বর, জ. প্রতীকবাদ, ঝ. দৃষ্টিকোণ, ঞ. চিত্রকল্প;
নিয়ম-কানুন:
যদিও সাহিত্য শিল্পে কোন নির্দিষ্ট নিয়ম নেই যা অবশ্যই অনুসরণ করা উচিত, তবে কিছু নীতি এবং নির্দেশিকা রয়েছে যা লেখকরা প্রায়শই কার্যকর এবং প্রভাবশালী সাহিত্যকর্ম তৈরি করতে বিবেচনা করে।
এই নীতিগুলি আকর্ষক আখ্যান তৈরি করতে, আকর্ষক চরিত্রগুলি তৈরি করতে এবং অর্থপূর্ণ থিমগুলিকে বোঝাতে সাহায্য করে৷ এখানে সাহিত্য শিল্পের কিছু সাধারণভাবে স্বীকৃত নিয়ম বা নীতি রয়েছে:
ক. মৌলিকতা, খ. নির্মলতা, গ. সমন্বয়, ঘ. চরিত্র উন্নয়ন, ঙ. প্লট গঠন, চ. দেখান, বলবেন না, ছ. থিম অন্বেষণ, জ. পুনর্বিবেচনা এবং সম্পাদনা, ঝ. সত্যতা, ঞ. ব্যাপকভাবে পড়া;
শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন
৪. শ্রবণ শিল্প
সংজ্ঞা: সঙ্গীত রচনা, গান গাওয়া, বাদ্যযন্ত্র বাজানো এবং সাউন্ড ডিজাইন নিয়ে কাজ হয় শিল্পের যে শাখায় সেগুলো শ্রবণ শিল্প হিসেবে পরিচিত। শ্রবণ শিল্প ছন্দ, সুর, সুর, এবং শব্দের মাধ্যমে মানসিক প্রভাব সৃষ্টি করে।
উপাদান: শ্রবণ কলা শিল্পের বিভিন্ন রূপকে অন্তর্ভুক্ত করে যা প্রাথমিকভাবে শ্রবণশক্তির মাধ্যমে অনুভব করা হয়। এই শিল্প ফর্মগুলি শব্দকে প্রকাশের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে। এখানে শ্রবণ শিল্পের মূল উপাদানগুলি রয়েছে: ক. শব্দ, খ. সঙ্গীত, গ. কণ্ঠস্বর, ঘ. ভাষা, ঙ. শব্দের প্রভাব, চ. নীরবতা, ছ. স্থানিক শব্দ, জ. রচনা এবং বিন্যাস, ঝ. ছন্দ ও লয়, ঞ. গতিশীল পরিসীমা;
নিয়ম-কানুন:
যদিও শ্রবণ শিল্পে কোনও কঠোর নিয়ম নেই যা শিল্পীদের অবশ্যই মেনে চলতে হবে, কিছু নীতি এবং নির্দেশিকা রয়েছে যা শ্রবণ শিল্পের গুণমান এবং প্রভাবকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
এই নীতিগুলি সৃজনশীলতাকে সীমাবদ্ধ করার জন্য নয়, বরং বাধ্যতামূলক এবং আকর্ষক শ্রবণ অভিজ্ঞতা তৈরি করার জন্য একটি কাঠামো প্রদান করার জন্য। এখানে শ্রবণ শিল্পের কিছু সাধারণভাবে স্বীকৃত নিয়ম বা নীতি রয়েছে:
ক. নির্মলতা, খ. ভারসাম্য, গ. আবেগ এবং অভিব্যক্তি, ঘ. সমন্বয়, ঙ. বিস্তারিত মনোযোগ, চ. মৌলিকতা, ছ. কারিগরি দক্ষতা, জ. শ্রোতা সংযুক্তি, ঝ. সত্যতা, ঞ. ক্রমাগত শিক্ষা;
শিল্পকলার বিভিন্ন শাখার শ্রেনিবিভাগ, উপাদান ও নিয়মকানুন
তৈরিকৃত শিল্পকর্ম বা কাজ এর ধরণ চিহ্নিত করণ
এবার আমরা সপ্তম শ্রেণির শিল্প ও সংস্কৃতি বিষয়ের শ্রেণিতে বিশ্বজোড়া পাঠশালা মোর এর পাঠে করার বিভিন্ন কাজ এবং তৈরি করেছি সেগুলো ধরণ চিহ্নিত করবো।
ক্রম | কাজের নাম/তৈরিকৃত শিল্পকর্ম | ধরণ |
০১ | বর্ণচক্রের রংগুলোর সাথে মিলিয়ে বিভিন্ন রঙের পাতা খুঁজে সংগ্রহ করব। | দৃশ্য কলা |
০২ | বর্ণচক্রের রংগুলোর সাথে মিলিয়ে বিভিন্ন রঙের ফুল খুঁজে সংগ্রহ করব। | দৃশ্য কলা |
০৩ | গানের সাথে মিলিয়েও বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপকরণ যেমন-মাটি, ছাই সংগ্রহ করে রং বানানোর চেষ্টা করব। | দৃশ্য কলা |
০৪ | খাতায় আঁকা পাতাগুলো রং করার ক্ষেত্রে গাঢ়-হালকা সবুজ রং এর পাশাপাশি অন্য রং মিলিয়ে দেখতে পারি কেমন হয়। যেমন- নীল, হলুদ, লাল ইত্যাদি রং মিশিয়ে দেখতে পারি । | দৃশ্য কলা |
০৫ | রঙের গানটি ভালোভাবে আনুশীলন করব। | উপস্থাপন কলা |
০৬ | আনন্দময় ভঙ্গির মধ্যদিয়ে সবাই মিলে গানটি গাওয়ার চেষ্টা করব। | উপস্থাপন কলা |
এছাড়াও সকল বিষয়ের নমুনা উত্তর সমূহ পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক গ্রুপ জয়েন করে নাও ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করো এবং ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন। তোমার বন্ধুকে বিষয়টি জানানোর জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি তার খাতায় নোট করে দিতে পারো।
1 Comment
Pingback: সপ্তম শ্রেণি শিল্প ও সংস্কৃতি ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রশ্ন ও উত্তর - অধ্যয়ন