আজ আমরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করব। সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান পাঠ্য বইয়ের বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রথম এসাইনমেন্ট হিসেবে এটি নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের কাজকে সহজ করতে যথাযথ নির্দেশনা ধারাবাহিকভাবে অনুসরণ করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন তথ্য অনুসন্ধান করার কাজটি সম্পন্ন করে তোমাদেরকে এখানে উপস্থাপন করে দিব।
আশা করছি এটি অনুসরণ করে তোমরা সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক পরীক্ষার অ্যাসাইনমেন্ট এর নির্ধারিত কাজ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করতে পারবে এবং সেটি গুছিয়ে নোট করে শিক্ষকের নিকট উপস্থাপন করতে পারবে।
সপ্তম শ্রেণি ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট ২০২৩ প্রথম সেশন বা দিবস
কতৃপক্ষের ঘোষিত নতুন কারিকুলামের আলোকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের প্রথম কর্ম দিবসে শিক্ষার্থীদের কে উপরোক্ত কাজটি করতে হবে।
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তথ্য অনুসন্ধান করতে আমরা দুটো ধাপে কাজটি সম্পন্ন করব। প্রথম ৪৫ মিনিট দল ভাগ হয়ে তিনটি থিমের উপর প্রশ্ন মালা তৈরি করব এবং তথ্য সংগ্রহ করবো।
ধাপ-১: শিক্ষার্থীরা মক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনটি থিমে প্রশ্ন তৈরি
সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বাৎসরিক সামাজিক মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট প্রথম দিবসের প্রথম কাজ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তথ্য অনুসন্ধান করার প্রাথমিক ধাপে আমরা মুক্তিযুদ্ধের তথ্য সংগ্রহের জন্য তিনটি থিম অনুসরণ করে প্রশ্নমালা তৈরি করতে হবে।
এই পোস্ট আপনার জন্যঃ ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক মূল্যায়ন এসাইনমেন্ট
মুক্তিযুদ্ধের তথ্য অনুসন্ধানের তিন তিনটি দেয়া হলো:
থিম নং | শিরোনাম |
১. | মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন; |
২. | মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা; |
৩. | মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা; |

বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত
তথ্য অনুসন্ধান করার জন্য থিম ভিত্তিক প্রশ্নমালা
১. মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন;
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তন সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানের জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নমালা প্রয়োজন হতে পারে:
১) ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কেমন ছিল?
২) পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে কী কী রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার ছিল?
এই পোস্ট আপনার জন্যঃ ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক মূল্যায়ন এসাইনমেন্ট
৩) ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ইত্যাদি ঘটনা পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী কী পরিবর্তন আনে?
৪) ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের রাজনৈতিক তাৎপর্য কী?
৫) পাকিস্তান সামরিক সরকার নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেওয়ার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
৬) ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা চালানোর ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
৭) ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
৮) ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
এই প্রশ্নমালাগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি আপনার গবেষণার উদ্দেশ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত প্রশ্নও যোগ করতে পারেন।
২. মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা;

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানের জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নমালা প্রয়োজন হতে পারে:
১. মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষ বলতে কী বোঝায়?
২. মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে কারা কারা ছিল?
৩. প্রতিটি পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা কী ছিল?
৪. প্রতিটি পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে প্রভাব ফেলেছে?
এই প্রশ্নমালাগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে আপনি মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি আপনার গবেষণার উদ্দেশ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত প্রশ্নও যোগ করতে পারেন।
এই পোস্ট আপনার জন্যঃ ৭ম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বার্ষিক মূল্যায়ন এসাইনমেন্ট
স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে আরও নির্দিষ্টভাবে জানতে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোও অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে:
১. প্রতিটি পক্ষের উদ্দেশ্য কী ছিল?
২. প্রতিটি পক্ষের লক্ষ্য কী ছিল?
৩. প্রতিটি পক্ষের কর্মকাণ্ড কী ছিল?
৪. প্রতিটি পক্ষের সাফল্য ও ব্যর্থতা কী ছিল?
৩. মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা;
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধানের জন্য নিম্নলিখিত প্রশ্নমালা প্রয়োজন হতে পারে:
১. মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তি বলতে কী বোঝায়?
২. মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির মধ্যে কারা কারা ছিল?
৩. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা কী ছিল?
৪. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে প্রভাব ফেলেছে?
এই প্রশ্নমালাগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে আপনি মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এছাড়াও, আপনি আপনার গবেষণার উদ্দেশ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত প্রশ্নও যোগ করতে পারেন।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে আরও নির্দিষ্টভাবে জানতে নিম্নলিখিত প্রশ্নগুলোও অনুসন্ধানের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে:
১. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির উদ্দেশ্য কী ছিল?
২. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির লক্ষ্য কী ছিল?
৩. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির কর্মকাণ্ড কী ছিল?
৪. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির সাফল্য ও ব্যর্থতা কী ছিল?
এই প্রশ্নগুলো অনুসন্ধানের মাধ্যমে আপনি মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের তথ্য ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধান
এই পর্যায়ে আমরা সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বাৎসরিক সমষ্টির মূল্যায়ন প্রথম কর্ম দিবসের কাজ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করতে উপরোক্ত প্রশ্নগুলোর ভিত্তিতে থিম অনুযায়ী নিচে নমুনা উত্তর দেয়া হলো। তোমাদের দলে বা এককভাবে তোমাদের উপর যে কাজ করবে সেটির প্রথমে প্রশ্নমালা গুলো আলাদা এবং পরে সেগুলোর উত্তর লিখে শিক্ষকের নিকট উপস্থাপন করবে।

থিম-১: মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন
নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর লক্ষ কর। এখানে মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের ধারাবাহিক উত্তর উল্লেখ করা হলো।
প্রশ্ন-১: ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কেমন ছিল?
উত্তর: ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর, পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য বৃদ্ধি পায়। পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যার অর্ধেক, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব কেন্দ্রীয় সরকারে ছিল খুবই কম।
অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বৈষম্যের কারণে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধিকার আন্দোলন জোরদার হয়। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও কেন্দ্রীয় সরকার তাদেরকে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু হয় এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
সংক্ষেপে, পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক অস্থিরতার মূল কারণ ছিল বৈষম্য ও অসন্তোষ।
প্রশ্ন-২: পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে কী কী রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার ছিল?
উত্তর: পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে নিম্নলিখিত রাজনৈতিক বৈষম্যের শিকার ছিল:
ক. প্রতিনিধিত্বের বৈষম্য: পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যার অর্ধেক, কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব কেন্দ্রীয় সরকারে ছিল খুবই কম। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ কেন্দ্রীয় সরকারে তাদের স্বার্থের প্রতিফলন দেখতে পেত না।
খ. ক্ষমতা বৈষম্য: কেন্দ্রীয় সরকারের বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিরা। পূর্ব পাকিস্তানিরা কেন্দ্রীয় সরকারে ক্ষমতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছিল না।
গ. নীতি বৈষম্য: কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিমালাগুলি পূর্ব পাকিস্তানের স্বার্থের পরিপন্থী ছিল। পূর্ব পাকিস্তানের অর্থনীতি ও উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকারের অবহেলা ছিল।
এইসব বৈষম্যের কারণে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ মনে করত যে তাদেরকে কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা অবহেলা করা হচ্ছে এবং তাদের স্বার্থকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধিকার আন্দোলন জোরদার হতে থাকে।
প্রশ্ন-৩: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ইত্যাদি ঘটনা পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কী কী পরিবর্তন আনে?
উত্তর: ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ব্যাপক পরিবর্তন আনে। এই ঘটনাগুলির ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধিকার চেতনার বিকাশ ঘটে এবং পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার পথকে সুগম করে।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে। ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলনের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বৈরাচারী আইয়ুব খানের সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
এই ঘটনাগুলির ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধিকারের জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠে। এই ঘটনাগুলি পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন-৪: ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভের রাজনৈতিক তাৎপর্য কী?
উত্তর: ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন জয় করে। এই নির্বাচনের ফলাফল ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বাধিকার চেতনার একটি বড় বিজয়।
এই নির্বাচনের রাজনৈতিক তাৎপর্য নিম্নরূপ:
ক. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বাধিকার চেতনার স্বীকৃতি: এই নির্বাচনের ফলাফল পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের স্বাধিকার চেতনার স্বীকৃতি দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তাদের অধিকারের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছিল। এই নির্বাচনের ফলে তাদের আন্দোলনকে একটি বৈধতা দেওয়া হয়।
খ. পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার পথ সুগম: এই নির্বাচনের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতার পথ সুগম হয়। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার ছিল পূর্ব পাকিস্তানের জন্য স্বায়ত্তশাসন। এই নির্বাচনের ফলে আওয়ামী লীগকে পূর্ব পাকিস্তানের সরকার গঠনের সুযোগ দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগ সরকার পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়।
সুতরাং, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক ছিল।
প্রশ্ন-৫: পাকিস্তান সামরিক সরকার নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেওয়ার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: পাকিস্তান সামরিক সরকার ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফল মেনে না নেওয়ার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তারা স্বাধীনতার জন্য আরও তীব্র আন্দোলন শুরু করে।
এই পরিস্থিতির ফলে পূর্ব পাকিস্তানে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি দেখা যায়:
ক. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি: পাকিস্তান সামরিক সরকারের এই সিদ্ধান্ত পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি করে। তারা মনে করে যে কেন্দ্রীয় সরকার তাদের স্বার্থকে অবহেলা করছে এবং তাদের অধিকারকে অস্বীকার করছে।
খ. পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি: পাকিস্তান সামরিক সরকারের এই সিদ্ধান্ত পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা আন্দোলনের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ স্বাধীনতার জন্য আরও তীব্র আন্দোলন শুরু করে।
গ. পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা বৃদ্ধি: পাকিস্তান সামরিক সরকারের এই সিদ্ধান্ত পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং স্বাধীনতার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়।
অবশেষে, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা শুরু করে। এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয় এবং ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
প্রশ্ন-৬: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা চালানোর ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে গণহত্যা চালানোর ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এই গণহত্যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ তীব্র ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে এবং তারা স্বাধীনতার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে ওঠে।
গণহত্যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি দেখা যায়:
ক. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি বৃদ্ধি: গণহত্যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বুঝতে পারে যে তারা পাকিস্তানের অংশ হিসাবে নিরাপদ নয়। তারা স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তার স্বীকৃতি দেয়।
খ. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি: গণহত্যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি পায়। তারা একটি সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়।
গ. পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা: গণহত্যার ফলে পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা হয়। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রতিহত করার জন্য লড়াই শুরু করে। অবশেষে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জন করে।
প্রশ্ন-৭: ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এই ঘোষণা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে স্বাধীনতার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে এবং স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনা করে।
স্বাধীনতা ঘোষণার ফলে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি দেখা যায়:
ক. পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য ঐক্য ও সংকল্প বৃদ্ধি: স্বাধীনতা ঘোষণার ফলে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার জন্য ঐক্য ও সংকল্প বৃদ্ধি পায়। তারা একটি সাধারণ শত্রুর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেয়।
খ. পূর্ব পাকিস্তানে স্বাধীনতা সরকারের গঠন: স্বাধীনতা ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে একটি স্বাধীন সরকার গঠিত হয়। এই সরকারের নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধ পরিচালিত হয়।
গ. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি লাভ: স্বাধীনতা ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বীকৃতি লাভের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
স্বাধীনতা ঘোষণা একটি ঐতিহাসিক ঘটনা যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন-৮: ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কীভাবে পরিবর্তিত হয়?
উত্তর: ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। এই স্বাধীনতা অর্জনের ফলে পূর্ব পাকিস্তান একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয় এবং এর নাম হয় বাংলাদেশ।
স্বাধীনতা অর্জনের ফলে নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলি দেখা যায়:
ক. বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার গর্ব ও আনন্দের সঞ্চার: স্বাধীনতা অর্জনের ফলে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার গর্ব ও আনন্দের সঞ্চার হয়। তারা একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্মের সাক্ষী হয়।
খ. বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত: স্বাধীনতা অর্জনের ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একটি স্বীকৃত রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়।
গ. বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু: স্বাধীনতা অর্জনের ফলে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করা হয় এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার প্রতিষ্ঠার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
স্বাধীনতা অর্জন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের জনগণের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে।
থিম-২: মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা;
এই পর্যায়ে আমরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বৈজ্ঞান ভিত্তিক তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ৩২ মুক্তিযুদ্ধের স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্ন মালার উত্তর জানব।
১. মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষ বলতে ঐতিহাসিকভাবে পূর্ব পাকিস্তান অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়কে বোঝায় যারা মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই পক্ষগুলির মধ্যে রয়েছে:
- বাঙালি জনগণ: পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল বাঙালি। বাঙালিরাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তি। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
- বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন: পূর্ব পাকিস্তানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: আওয়ামী লীগ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মুসলিম লীগ, কমিউনিস্ট পার্টি, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (জামায়াত)।
- ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ: পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা আবদুল আলীম, দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী।
- সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গ: পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কবি-সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, সাংবাদিক জহুরুল হক, আবুল হাসনাত মোহাম্মদ আলী, শিল্পী কামরুল হাসান, আবদুর রহমান, মরহুম শহীদুল আলম।
- সাধারণ জনগণ: পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
এই স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি সর্বাত্মক ও জনযুদ্ধে পরিণত হয়।
২. মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে কারা কারা ছিল?
মুক্তিযুদ্ধে স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে নিম্নলিখিত ব্যক্তিবর্গ ও গোষ্ঠী ছিল:
বাঙালি জনগণ: পূর্ব পাকিস্তানের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ ছিল বাঙালি। বাঙালিরাই ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তি। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন: পূর্ব পাকিস্তানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
১. আওয়ামী লীগ, ২. ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), ৩. ছাত্রলীগ, ৪. যুবলীগ, ৫. মুসলিম লীগ, ৬. কমিউনিস্ট পার্টি, ৭. জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (জামায়াত);
ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ: পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
১. হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী;
২. জামিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা আবদুল আলীম;
৩. দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা শাহ আহমদ শফী;
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গ: পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
১. কবি-সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী, ২. সাংবাদিক জহুরুল হক, ৩. আবুল হাসনাত মোহাম্মদ আলী, ৪. শিল্পী কামরুল হাসান, ৫. আবদুর রহমান, ৬. মরহুম শহীদুল আলম;
সাধারণ জনগণ: পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
এই স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি সর্বাত্মক ও জনযুদ্ধে পরিণত হয়।
৩. প্রতিটি পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা কী ছিল?
বাঙালি জনগণ:
বাঙালি জনগণ ছিল মুক্তিযুদ্ধের মূল শক্তি। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। বাঙালি জনগণই মুক্তিযুদ্ধের সফলতার মূল কারণ।
বাঙালি জনগণ মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করেছিলেন। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রয় ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন:
পূর্ব পাকিস্তানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ছিল সবচেয়ে প্রভাবশালী দল। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল এবং মুক্তিবাহিনী গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও সংগঠনও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)
- ছাত্রলীগ
- যুবলীগ
- মুসলিম লীগ
- কমিউনিস্ট পার্টি
- জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (জামায়াত)
এই রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ, সরবরাহ ও অর্থায়নে সাহায্য করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ:
পূর্ব পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের আধ্যাত্মিক সাহস যুগিয়েছিলেন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গ:
পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ববর্গও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা তাদের সাহিত্য, সংগীত ও চিত্রকর্মের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে লালন করেছিলেন।
সাধারণ জনগণ:
পূর্ব পাকিস্তানের সাধারণ জনগণও মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
সাধারণ জনগণ মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণ করেছিল। তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের স্থানীয় সহযোগীদের বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াই করেছিল। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের খাবার, আশ্রয় ও তথ্য দিয়ে সাহায্য করেছিল। তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
এই স্থানীয় বিভিন্ন পক্ষের অংশগ্রহণের ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ একটি সর্বাত্মক ও জনযুদ্ধে পরিণত হয়।
৪. প্রতিটি পক্ষের অবস্থান ও ভূমিকা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে প্রভাব ফেলেছে?
পাকিস্তান পক্ষ: পূর্ব পাকিস্তানকে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে রাখা। সামরিক অভিযান, গণহত্যা। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে প্রভাব ফেলে।
বাংলাদেশ পক্ষ: পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা। সশস্ত্র সংগ্রাম, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রভাব ফেলে।
ভারত পক্ষ: বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন। সামরিক ও আর্থিক সাহায্য। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রভাব ফেলে।
বিশ্ব জনমত: মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। পাকিস্তান পক্ষকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করে।
থিম-৩: মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা
এই পর্যায়ে আমরা সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান প্রথম কর্ম দিবসের নির্ধারিত কাজ থিম ৩৩ মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ব্যক্তির অবস্থান এবং ভূমিকা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে উপরোক্ত প্রশ্নমালা গুলোর উত্তর দেয়ার চেষ্টা করব।
১. বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তি বলতে কী বোঝায়?
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তি বলতে বোঝায় সেই সকল রাষ্ট্র ও ব্যক্তি যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল এবং বিভিন্নভাবে মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন করেছিল। এই রাষ্ট্র ও ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে:
ক. রাষ্ট্র: ভারত, সোভিয়েত ইউনিয়ন, চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালি, জার্মানি, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইত্যাদি।
খ. ব্যক্তি: জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট, নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনী এবং ভারতের রাষ্ট্রদূত নীলিমা সিং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিউব হ্যাকম্যান, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে, ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যালডো মোরো, কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ারসন, ইত্যাদি।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির সমর্থন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সমর্থনের ফলে মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বৃদ্ধি পায় এবং পাকিস্তান পক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। অবশেষে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান পক্ষ আত্মসমর্পণ করে এবং বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
২. মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির মধ্যে কারা কারা ছিল?
মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছে:
রাষ্ট্র:
- ভারত: ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন করেছিল। ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সামরিক, আর্থিক, ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করেছিল।
- সোভিয়েত ইউনিয়ন: সোভিয়েত ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষ অবলম্বন করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- চীন: চীন মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষ অবলম্বন করেছিল। চীন পাকিস্তানকে সামরিক সাহায্য প্রদান করেছিল।
- যুক্তরাষ্ট্র: যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধে প্রথমদিকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়।
- ফ্রান্স: ফ্রান্স মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ফ্রান্স মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- যুক্তরাজ্য: যুক্তরাজ্য প্রথমদিকে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। তবে, পরবর্তীতে যুক্তরাজ্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেয়।
- জাপান: জাপান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। জাপান মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- ইতালি: ইতালি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। ইতালি মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- জার্মানি: জার্মানি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। জার্মানি মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- কানাডা: কানাডা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। কানাডা মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়া মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। অস্ট্রেলিয়া মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
- নিউজিল্যান্ড: নিউজিল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল। নিউজিল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল।
ব্যক্তি:
- জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট: উ থান্ট মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।
- নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনী এবং ভারতের রাষ্ট্রদূত নীলিমা সিং: নীলিমা সিং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিউব হ্যাকম্যান: হিউব হ্যাকম্যান মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।
- যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে: এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।
- ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যালডো মোরো: অ্যালডো মোরো মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।
- কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ারসন: পিয়ারসন মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন।
এই রাষ্ট্র ও ব্যক্তিদের সমর্থন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সমর্থনের ফলে মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বৃদ্ধি পায় এবং পাকিস্তান পক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি হয়।
৩. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা কী ছিল?
ভারত:
ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি সমর্থন করেছিল। ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সামরিক, আর্থিক, ও রাজনৈতিকভাবে সমর্থন করেছিল।
সামরিক সাহায্য: ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে সামরিক সাহায্য প্রদান করেছিল। এই সাহায্যের মধ্যে ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর সৈন্য, অস্ত্রশস্ত্র, ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম। ভারতের সামরিক সাহায্য মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে বিজয়ী হতে সাহায্য করেছিল।
আর্থিক সাহায্য: ভারত মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছিল। এই সাহায্যের মধ্যে ছিল অর্থ, খাদ্য, ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। ভারতের আর্থিক সাহায্য মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছিল।
রাজনৈতিক সমর্থন: ভারত মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিল। ভারত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করে এবং বাংলাদেশকে স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কাজ করেছিল। ভারতের রাজনৈতিক সমর্থন মুক্তিযুদ্ধের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছিল।
ব্যক্তি:
- জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট: উ থান্ট মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন। উ থান্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য ভারতকে উৎসাহিত করেছিলেন।
নোবেল বিজয়ী কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাতনী এবং ভারতের রাষ্ট্রদূত নীলিমা সিং: নীলিমা সিং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। নীলিমা সিং বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছিলেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিউব হ্যাকম্যান: হিউব হ্যাকম্যান মুক্তিযুদ্ধকে একটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন। হিউব হ্যাকম্যান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বক্তব্য রেখেছিলেন।
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে: এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন। এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বক্তব্য রেখেছিলেন।
ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যালডো মোরো: অ্যালডো মোরো মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন। অ্যালডো মোরো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য ভারতকে উৎসাহিত করেছিলেন।
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ারসন: পিয়ারসন মুক্তিযুদ্ধকে একটি নৈতিক আন্দোলন হিসেবে সমর্থন করেছিলেন। পিয়ারসন জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রস্তাব উত্থাপন করার জন্য ভারতকে উৎসাহিত করেছিলেন।
৪. প্রতিটি রাষ্ট্র ও ব্যক্তির অবস্থান ও ভূমিকা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বা বিপক্ষে প্রভাব ফেলেছে?
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রাষ্ট্র ও ব্যক্তির সমর্থন ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের সামরিক ও আর্থিক সাহায্য মুক্তিবাহিনীর বিজয়ের জন্য অপরিহার্য ছিল।
জাতিসংঘ মহাসচিব উ থান্ট, ভারতের রাষ্ট্রদূত নীলিমা সিং, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর হিউব হ্যাকম্যান, যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হ্যাথওয়ে, ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী অ্যালডো মোরো, কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পিয়ারসনসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
এই সমস্ত সমর্থন ও ভূমিকা পাকিস্তান পক্ষের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে।
প্রিয় শিক্ষার্থীরা এই ছিল তোমাদের জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান করতে প্রয়োজনীয় প্রশ্নমালা এবং সেগুলোর সম্ভাবনা মনে উত্তর। তোমরা এ সকল প্রশ্ন এনালাইসিস করে নিজেদের মতো করে শিক্ষকের দেয়া নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবেদন, দেয়ালিকা, পুস্তিকা, পোস্টার, আকারে জমা দিবে।
তোমাদের জন্য দ্বিতীয় দিনে সপ্তম শ্রেণী ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বাৎসরিক সামাজিক মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম কিভাবে করবে তার কয়েকটি নমুনা তৈরির কাজ চলছে। আমাদের সাথেই থাকো এবং নিয়মিত ভিজিট করো তাহলেই সেটি পেয়ে যাবে।
অধ্যায়ন ডট কম এর সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন, ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।
সেশনের নাম | বিষয়ের নাম | অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম ও সমাধান |
প্রথম সেশন | বিজ্ঞান | এলাকায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে বেশি ব্যবহৃত যানবাহন এবং অন্যন্য তথ্য |
দ্বিতীয় সেশন | ইসলাম শিক্ষা | ডেঙ্গু বা অন্য কোন রোগ আক্রান্ত রোগীর সেবায় কী কী করা যায় |
তৃতীয় সেশন | ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান | বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য অনুসন্ধান |
Ghjbbkkbbb
Very nice
সুন্দর দিয়েছেন। অনেক উন্নত হয়েছে।
লেখাগুলো অনেক বেশি বড়। আরেকটু সংক্ষিপ্ত করতে হবে।
thanks for this 😊