বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি: প্রিয় শিক্ষার্থীরা তোমাদের জন্য সপ্তম শ্রেণি বাংলা বার্ষিক পরীক্ষার অ্যাসাইনমেন্ট ২০১০ ও ২০১৫ সালের বাঘ জরিপ এর ভিত্তি করে একটি বিশ্লেষণমূলক রচনার নমুনা নিয়ে এলাম। এখানে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি: সুসংবাদ নাকি উদ্বেগ? শিরোনামে রচনাটি দেওয়া হল। তোমরা তোমাদের প্রয়োজনমত এখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করে মূল্যায়নের দিন উপস্থাপন করবে।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি: সুসংবাদ নাকি উদ্বেগ?
ভূমিকা: বাঘ একটি সুন্দর ও শক্তিশালী প্রাণী। এটি বিশ্বের অন্যতম বিপন্ন প্রাণীও বটে। বাঘের সংখ্যা হ্রাসের প্রধান কারণ হলো অবৈধ শিকার। বাঘের চামড়া, হাড়, এবং অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য বাঘ শিকার করা হয়। এছাড়াও, বাঘের আবাসস্থল ধ্বংসও বাঘের সংখ্যা হ্রাসের অন্যতম কারণ।
২০১০ সাল এবং ২০১৫ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাঘের সংখ্যার পরিবর্তন দেখানো হয়েছে। ছক থেকে দেখা যায়, ২০১৫ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাঘের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশ | ২০১০ | ২০১৫ |
---|---|---|
ভারত | ১,৪১১ | ২,২২৬ |
বাংলাদেশ | ১০৩ | ১০৬ |
নেপাল | ১২১ | ২৩৫ |
ভুটান | ১০০ | ১০৩ |
মিয়ানমার | ১৬ | ১৯ |
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি সুসংবাদ। এটি প্রমাণ করে যে, বাঘ সংরক্ষণের জন্য নেওয়া পদক্ষেপগুলো কার্যকর হয়েছে। ২০১০ সালে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাঘের সংখ্যা ছিল মাত্র ৩,৯১০টি। ২০১৫ সালে, এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৪,৮০০টিতে। এই বৃদ্ধির পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে।
প্রথমত, ভারত, নেপাল, এবং বাংলাদেশ সরকার বাঘ সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১. অবৈধ শিকারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা।
২. বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।
৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
দ্বিতীয়ত, বাঘের আবাসস্থল বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাঘের আবাসস্থলের পরিমাণ ছিল ২,১০,০০০ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালে, এই পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ২,২৫,০০০ বর্গকিলোমিটারতে।
তৃতীয়ত, বাঘের প্রজনন হার বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১০ সালে, প্রতি ১০০টি বাঘের মধ্যে মাত্র ১০টি বাঘের বাচ্চা জন্মগ্রহণ করত। ২০১৫ সালে, এই হার বেড়ে দাঁড়ায় ১৫%-এ।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি বড় সাফল্য। তবে, এই সাফল্যকে ধরে রাখার জন্য আমাদের আরও অনেক কিছু করতে হবে। কারণ, বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাঘ ও মানুষের সংঘাতের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।
আরও দেখুনঃ সপ্তম শ্রেণি বাংলা বার্ষিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৩ অ্যাসাইনমেন্ট ও সমাধান
বাঘ ও মানুষের সংঘাত রোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
- বাঘের আবাসস্থলের মধ্যে মানুষের বসতি স্থাপন নিয়ন্ত্রণ করা।
- বাঘ ও মানুষের সংঘাতের বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
- বাঘ ও মানুষের সংঘাতের সমাধানের জন্য সুষ্ঠু ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বাঘ একটি অমূল্য সম্পদ। এটিকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমরা সকলে মিলে বাঘের সংখ্যা ধরে রাখতে এবং বাঘ ও মানুষের সংঘাত রোধে কাজ করতে পারি।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির সুবিধা ও অসুবিধা
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির কিছু সুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
বাঘের আবাসস্থল ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। বাঘ হলো একটি শীর্ষ শিকারী প্রাণী। এটি বাঘের আবাসস্থলে অন্যান্য প্রাণী প্রজাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ফলে বাঘের আবাসস্থলের জীববৈচিত্র্য রক্ষা করা সম্ভব হয়।
বাঘের অবদানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে। বাঘের শিকারের ফলে বাঘের আবাসস্থলে গবাদি পশুর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে বাঘের আবাসস্থলের গাছপালা ও ফসল রক্ষা করা সম্ভব হয়। এছাড়াও, বাঘের মল-মূত্র থেকে বনভূমির মাটিতে পুষ্টি পদার্থ যুক্ত হয়। ফলে বনভূমির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
বাঘের পর্যটন শিল্পের উন্নতি হবে। বাঘ একটি আকর্ষণীয় প্রাণী। তাই বাঘের আবাসস্থলে পর্যটকদের আগমন বৃদ্ধি পায়। ফলে বাঘের আবাসস্থলের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নতি হয়।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
বাঘ ও মানুষের সংঘাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাঘের আবাসস্থল মানুষের বসতি এলাকার কাছাকাছি চলে আসতে পারে। ফলে বাঘ ও মানুষের সংঘাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।
বাঘের জন্য খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাঘের আবাসস্থলে শিকারের প্রাণীর সংখ্যা কমে যেতে পারে। ফলে বাঘের জন্য খাদ্যের অভাব দেখা দিতে পারে।
বাঘের রোগের বিস্তার হতে পারে। বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে বাঘের মধ্যে রোগের বিস্তার হতে পারে। ফলে বাঘের স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি একটি জটিল বিষয়। এর সুবিধা ও অসুবিধা উভয়ই বিবেচনায় নিয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

বাঘ সংরক্ষণের জন্য পদক্ষেপ
বাঘ সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
১. অবৈধ শিকারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা।
২. বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণ করা।
৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণ
বাঘের আবাসস্থল সংরক্ষণের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
১. বন উজাড় রোধ করা।
২. বনজ সম্পদ টেকসইভাবে ব্যবহার করা।
৩. বনজ সম্পদের পুনরুদ্ধার করা।
জনসচেতনতা বৃদ্ধি
বাঘ সংরক্ষণের জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো নেওয়া যেতে পারে:
১. স্কুল, কলেজ, ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাঘ সংরক্ষণের বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া।
২. মিডিয়াতে বাঘ সংরক্ষণের বিষয়ে প্রচারণা করা।
৩. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাঘ সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
বাঘ আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। এটিকে রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। আমরা সকলে মিলে বাঘ সংরক্ষণের জন্য কাজ করতে পারি।
সূত্র: প্রথম আলো ইউটিউব চ্যানেল
Tremendous
কিন্তু স্যার ভিয়েতনাম এর রচনা টা নেই 😔😔😔😔