সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৩ এর ০৩ টি অ্যাসাইনমেন্টি এর প্রথমটি হলো পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা। নির্দেশনা অনুযায়ী ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সামষ্টিক মূল্যায়নের দিন বিভিন্ন পেশাজীবীদের সাথে আলোচনা সভা করবে এবং নির্ধারিত কয়েকটি প্রশ্ন করে প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে হবে।
আমরা তোমাদের জন্য এই কাজটি সহজে করার প্রয়োজনীয় গাইড লাইন এবং নমুনা কাজ করে দেব। আশা করছি তোমরা এটি হুবহু অনুসরণ করে পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা সুন্দরভাবে আয়োজন করতে পারবে।
গত পর্বে আমরা আমার এলাকা কেন ভিন্ন এর উপর তথ্য সংগ্রহ করে প্রকাশনা প্রণয়ন করেছিলাম। যা ৭ম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান করতে সহযোগিতা করবে।
সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট
নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় সমূহের জন্য নির্ধারিত ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ২০২৩ এর রুটিন অনুযায়ী সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বিষয়ের অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা (প্রথম সামষ্টিক মূল্যায়ন) ০৮ জুন ২০২৩;
চুড়ান্ত মূল্যায়ন এর দিন শিক্ষার্থীদের ০৩ টি কাজ করতে হবে যার মধ্যে প্রথমটি হলো পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা।
কিভাবে এই কাজটি করবো সেটি নিয়ে এই পর্বে আলোচনা করবো। আমাদের সাথেই থাকো, সেই সাথে সপ্তম শ্রেণির অন্যন্য বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান পেতে আমাদের ওয়েবসাইটের শিখন সহায়তা – সপ্তম শ্রেণি দেখতে পারো।
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত
মতবিনিময় সভা আয়োজন এর কার্যক্রম
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন করার জন্য আমাদের কিছু নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। শ্রেণি শিক্ষক এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিবেন যা ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন নির্দেশিকায় দেওয়া আছে।
মোট ২টি সেশনে সভা আয়োজনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। প্রথম দিন ও দ্বিতীয় দিনে সংমিশ্রণে সপ্তম শ্রেণির জীবন জীবিকা বিষয়ের চূড়ান্ত মূল্যায়ন পরিচালিত হবে।
পেশাজীবীদের সাথে মত বিনিময় সভা আয়োজন কাজের ধারাবাহিকতা
সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকার অ্যাসাইনমেন্ট পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজনে যে দুটো সেশন অনুষ্ঠিত হবে তাতে যেসকল কাজ করতে হবে তার ধাপগুলো দেওয়া হল-
সভা আয়োজনের প্রস্তুতি সেশন-১ / প্রথম ক্লাস (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা)
১. সপ্তম শ্রেণি ব্যতিত অন্যন্য শ্রেণির অভিভাবকদের মধ্যে পেশাজীবী নির্বাচন এবং তাদের তথ্য সংগ্রহ;
২. অতিথিদের জন্য নিমন্ত্রণপত্র প্রস্তুত;
৩. অভিভাবকদের কাছে নিমন্ত্রণপত্র পৌছানো এবং মেসেজ পাঠানো;
৪. পেশাজীবীদের সাথে মত বিনিময় সভা আয়োজন এর জন্য একটি নীতিমালা প্রনয়ণ;
প্রস্তুতি সেশন-২ / দ্বিতীয় ক্লাস (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা)
৫. সকল আমন্ত্রিত অতিথির নিকট নিমন্ত্রণ পৌছানো হয়েছে কিনা নিশ্চিত হওয়া এবং উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ;
৬. পেশার খাতে চাহিদা পরিবর্তন ও ভবিষ্যৎ পেশার দক্ষতা অনুসন্ধানের জন্য মতামতপত্র তৈরি;
৭. মতামতপত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ;
৮. মতামত সভা শেষে নিজেদের মতামত উপস্থাপন করে একটি প্রতিবেদন লেখা;
৯. দেশীয় শ্রমবাজারের চাহিদা পরিবর্তন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ;
চূড়ান্ত মূল্যায়ন (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা)
১০. আমন্ত্রিত পেশাজীবীগণকে অভ্যর্থনা জানানো (শিক্ষার্থী ও শিক্ষক মিলে করবে);
১১. শুভেচ্ছা ও স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান (শিক্ষক করবে);
১২. শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা;
১৩. সভা শেষে প্রতিবেদন প্রস্তুত;
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন
এই পর্যায়ে আমরা কাজের ধারাবাহিকতার মাধ্যমে একটি একটি করে কাজগুলো করবো। খুব ভালোভাবে এগুলো অনুসরণ করলে আশা করছি সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বিষয়ের প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন করতে পারবে।
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত
১. সপ্তম শ্রেণি ব্যতিত অন্যন্য শ্রেণির পেশাজীবী অভিভাবক নির্বাচন
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজনের প্রস্তুতি স্বরূপ জীবন ও জীবিকা বিষয়ের শিক্ষক সপ্তম শ্রেণির ব্যতিত অন্যন্য শ্রেণির অভিভাবকদের মধ্যে থেকে কৃষি, সেবা ও শিল্প তিন খাত থেকে ০৯ জন পেশাজীবীর তালিকা প্রস্তুত করবেন।
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের একটি নমুনা তালিকা নিম্নে দেওয়া হল-
ক্রম | পেশাজীবীর নাম | পেশার নাম | ঠিকানা | মোবাইল নম্বর |
০১ | খায়রুল আলম | শিক্ষক | মক্রবপুর, মক্রবপুর, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01822-80XXXX |
০২ | মাসুদুল হাসান | কৃষক | বক্সগঞ্জ, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01760-90XXXX |
০৩ | গোপাল চন্দ্র দাস | শ্রমজীবী | ফুলগাজী, ফেনী | 01715-34XXXX |
০৪ | মাহবুবুল হক | ডাক্তার | মদনপুর, ডাকঘর-আজিয়ারা বাজার, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01819-23XXXX |
০৫ | কামরুন নাহার | শিক্ষক | মদনপুর, ডাকঘর-আজিয়ারা বাজার, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01815-65XXXX |
০৬ | আনসার আহাম্মদ | কৃষক | কিনারা, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01737-01XXXX |
০৭ | আবু বকর ছিদ্দিক | কৃষক | মইশাই, সেনবাগ, নোয়াখালী | 01711-32XXXX |
০৮ | জাহাঙ্গীর আলম | শিক্ষক | অষ্টগ্রাম, এজি মিয়ার বাজার, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01833-14XXXX |
০৯ | জালাল আহাম্মদ | প্লাম্বার | মদনপুর, আজিয়ারা বাজার, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা | 01815-59XXXX |
২. অতিথিদের জন্য নিমন্ত্রণপত্র প্রস্তুত
এই পর্যায়ে সপ্তম শ্রেণির জীবন জীবিকা বিষয়ের প্রথম অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষায় পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের একটি নমুনা তালিকা সভা আয়োজনের জন্য একটি আমন্ত্রণপত্র রচনা করবো। নিচের নমুনাটি দেখুন।
আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়
নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা
——————————————————————–
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আমন্ত্রণপত্র
জনাব/জনাবা,
শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। আপনায় সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, অত্র বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জীবন ও জীবিকা বিষয়ের সামষ্টিক মূল্যায়নের জন্য “পেশাজীবীদের সাথে মত বিনিময় সভা” আগামী ০৮ জুন ২০২৩ তারিখ, বৃহস্পতিবার সকাল ১০:০০ ঘটিকায় অনুষ্ঠিত হবে।
উক্ত মত বিনিময় সভায় আপনাকে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য বা মতামত উপস্থাপন করার অনুরোধ করা হলো।
শুভেচ্ছান্তে.
আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির সকল শিক্ষার্থী
৩. অভিভাবকদের কাছে নিমন্ত্রণপত্র পৌছানো
৯টি চিঠি প্রেরণের খাম ব্যবহার করে আমন্ত্রিত অভিভাবকদের হাতে হাতে চিঠি প্রেরণ এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং শিক্ষক প্রয়োজনে অভিভাবকের মুঠোফোনে পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা সংক্রান্ত মেসেজ এর মাধ্যমে দাওয়াত পৌছাবেন এবং পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের উপস্থিতি নিশ্চিত করবেন।
খামগুলো শিক্ষার্থীরা নিজ হাতে পূরণ করবে। খাম লেখার সময় চিঠি লেখার নিময় অনুসরণ করতে হবে। পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত কাজে খুব গুরুত্বপূর্ণ;
৪. মত বিনিময় সভার নীতিমালা প্রণয়ন
এই পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ও শিক্ষক মিলে আলোচনার মাধ্যমে পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজনের নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। নীতিমালাটি প্রণয়নের ক্ষেত্রে নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন।
নীতিমালার নাম | পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা |
আয়োজক | আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীবৃন্দ |
সভা আয়োজনের তারিখ ও সময় | ০৮ জুন ২০২৩, সকাল ১০:০০ ঘটিকায় |
৫. পেশার খাতে চাহিদা পরিবর্তন ও ভবিষ্যৎ পেশার দক্ষতা অনুসন্ধানের জন্য মতামতপত্র তৈরি
সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বিষয়ের ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন এর পেশাজীবীদের সাথে মত বিনিময় সভায় অতিথিদের থেকে বিভিন্ন বিষয়ের মতামত সংগ্রহ করার জন্য মতামতপত্র প্রস্তুত করতে হবে।
প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাদের মতামতপত্রে নির্ধারিত অভিভাবকের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে হবে এবং পরবর্তীতে প্রতিবেদন তৈরি করবে।
নমুনা মতামতপত্র (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা)
প্রতিষ্ঠানের নাম | আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয় |
ঠিকানা | নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা |
সভার নাম | পেশাজীবীদের সাথে মত বিনিময় সভা |
আয়োজক | সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীবৃন্দ |
সভার তারিখ ও সময় | ০৮ জুন ২০২৩, সকাল ১০ ঘটিকা |
মতামত প্রদানকারী অতিথির নাম | |
অথিতির পেশা | |
পেশার খাতে চাহিদা পরিবর্তন ও ভবিষ্যৎ পেশার দক্ষতা অনুসন্ধানের জন্য তার মতামত | …………… …………… ……………. …………… …………… …………… …………… …………… ……………. ………….. ………… ……………. …………… ……… (এখানে অতিথির প্রদানকরা মতামত লিপিবদ্ধ করতে হবে) |
মতামত গ্রহণকারী শিক্ষার্থীর নাম | |
শ্রেণি রোল/আইডি |
চূড়ান্ত মূল্যায়ন (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা)
এই পর্যায়ে আমরা সপ্তম শ্রেণীর জীবন ও জীবিকা পাঠ্য বইয়ের অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার চূড়ান্ত মূল্যায়ন পর্বে উপস্থিত। এই দিন আমরা প্রস্তুতি সেশনে নেয়া প্রস্তুতিমূলক কাজগুলোর আলোকে পেশাজীবীদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করব।
মত বিনিময় চলাকালে আমরা যে সকল কাজ করব তা সংক্ষেপে এখানে বিবরণ দেয়া হলো। আমন্ত্রিত অতিথিদের যে সকল প্রশ্ন করব এবং তাদের সম্ভাব্য উত্তরগুলো এখানে উল্লেখ করলাম।
তোমরা মতামতপত্রে এখানে দেওয়া প্রশ্ন এবং উত্তরগুলো সুন্দরভাবে লিখবে। তবে খেয়াল রাখবে একই পেশার লোকের জন্য একটি মতামত পত্র রাখবে। পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা এটি ব্যবহার করতে হবে।
পেশাজীবীদের সাথে মতবিনিময় সভায় অতিথিদের জন্য প্রশ্ন সমূহ এবং উত্তর
মতামত পত্রে যেসব প্রশ্ন থাকতে পারে তার নমুনা এখানে দেয়া হলো। তোমরা দলগত আলোচনার মাধ্যমে এই প্রশ্নপত্র গুলো তৈরি করবে। এখানে আমরা কৃষি, সেবা ও শিল্প এই তিন খাতের অতিথির সম্ভব্য উত্তর কি হতে পারে তা জানাবো।
১. আপনার পেশা কি?
কৃষি: | আমি একজন কৃষক। |
সেবা: | আমি একজন ডাক্তার। |
শিল্প: | আমি একজন কামার। |
২. কত বছর ধরে এই পেশায় আছেন?
কৃষক | ৮ বছর |
ডাক্তার | ৫ বছর |
কামার | ১২ বছর |
৩. আপনার পেশায় এখন কী ধরনের উপকরণ বা সামগ্রী ব্যবহার করেন?
কৃষক | সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কৃষিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখন সেচ দেওয়ার জন্য উন্নত মানের সেচ পাম্প আছে, জমিন চাষ করার জন্য ছোট ছোট ট্রাক্টর এবং ফসল কাটার জন্যও আছে অনেক মেশিন। |
ডাক্তার | একজন গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে আমি প্রাথমিক রোগ নির্ণয় ও সনাক্ত করার কিছু আধুনিক উপকরণ ব্যবহার করি যার মধ্যে- ১. স্টেথোস্কোপ: হৃদপিন্ড, ফুসফুস এবং অন্যন্য অভ্যন্তরীন শব্দ শনাক্ত করার জন্য; ২. Blood pressure cuff: রক্তচাপ পরিমাপ করতে ; ৩. ডিজিটাল থার্মোমিটার: দ্রুত এবং সুনির্দিষ্টভাবে রোগীর শরীরের তাপমাত্রা রিডিং করতে; ৪. Examination light: শরীরের অভ্যন্তরে কানে, গলায়, এবং নাকের ভিতরের বিভিন্ন সমস্যা সনাক্ত; ৫. পোর্টেবল আল্ট্রাসাইন্ড ডিভাইস: গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করা বা নির্দিষ্ট অঙ্গে অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করার জন্য; ৬. গ্লুকোমিটার: রোগীদের ডায়াবেটিস নিরীক্ষণ করতে; ৭. ডিজিটাল ব্লাড প্রেসার মনিটর: সঠিক ও দ্রুত উপায় রক্তচাপ পরিমাপ করতে; ৮. পালস্ অক্সিমিটার: শ্বাসযন্ত্রের স্বাস্থ্যের মূল্যায়ন করতে এবং রোগীদের অক্সিজেনের মাত্রা নিরীক্ষণ করতে; ইত্যাদি |
কামার | একজন কামার হিসেবে আমি লোহার জিনিসপত্র তৈরি করে থাকি। বর্তমানে আমি কাজের জন্য উল্লেখ্যযোগ্য যেসকল যন্ত্র বা উপকরণ ব্যবহার করি তাহল- ১. ফর্গ: কামারের জন্য একটি মৌলিক হাতিয়ার। এটি একটি ফায়ারপট বা চুলা নিয়ে গঠিত যেখানে ধাতু উত্তপ্ত হয় এবং আগুনের তাপ বাড়ানোর জন্য নিয়ন্ত্রিত বায়ুপ্রবাহ সরবরাহ করার জন্য একটি ব্লোয়ার বা বেলো। ২. অ্যানভিল: ধাতুর একটি ভারী ব্লক যার সমতল পৃষ্ঠ ধাতুকে আকৃতি ও জাল করার জন্য ওয়ার্কস্পেস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এটিতে সাধারণত একটি শিং থাকে, একটি বৃত্তাকার অংশ যা ধাতুকে বাঁকানো এবং আকৃতি দেওয়ার জন্য ব্যবহৃত হয় এবং একটি শক্ত গর্ত এবং প্রিচেল ছিদ্র থাকে যা হাতিয়ার ধারণ করে। ৩. হাতুড়ি: কামাররা ধাতুকে আকৃতি ও কারসাজির জন্য বিভিন্ন ধরনের হাতুড়ি ব্যবহার করে। একটি ক্রস-পিন হাতুড়ি, বল-পিন হাতুড়ি এবং রাউন্ডিং হাতুড়ি কিছু সাধারণ উদাহরণ। প্রতিটি হাতুড়ি একটি ভিন্ন আকার এবং ওজন আছে, নির্দিষ্ট কাজের জন্য উপযুক্ত। ৪. চিমটি: চিমটি হল প্রয়োজনীয় হাতিয়ার যা কামাররা গরম ধাতুকে নিরাপদে ধরে রাখতে এবং ব্যবহার করতে ব্যবহার করে। এগুলি বিভিন্ন আকার এবং ডিজাইনে আসে, লম্বা হ্যান্ডেলগুলির সাথে একটি দৃঢ় আঁকড়ে ধরে এবং কামারের হাতকে তাপ থেকে দূরে রাখে। ৫. চিসেল এবং ঘুষি: চিসেল এবং ঘুষিগুলি কাটা, চিহ্নিত এবং ধাতুতে ছাপ তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি বিভিন্ন আকার এবং আকারে আসে এবং জটিল বিবরণ এবং আলংকারিক কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ৬. আধুনিক পাওয়ার টুলস্: কাজে গতি ও এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াতে কিছু আধুনিক যন্ত্র আছে এর মধ্যে গ্রাইন্ডার, পাওয়ার হ্যামার, হাইড্রোলিক প্রেস এবং প্লাজমা কাটার অন্যতম |
৪. আপনার পেশায় আগে কী ধরনের উপকরণ বা সামগ্রী ব্যবহার করতেন?
কৃষক | কৃষিকাজে আমরা আগে বিভিন্ন সাধারণ সরঞ্জাম ও উপকরণ ব্যবহার করতাম। এগুলোর মধ্যে অন্যতম- ১. হাতের লাঙল (কোদাল), ২. কাস্তে, ৩. ঝুড়ি, ৪. মর্টার এবং পেস্টল, ৫. পানি ছিটানোর পাত্র এবং বাঁশের ছিটানো, ৬. বেতের ঝুড়ি ইত্যাদি; |
ডাক্তার | গ্রাম্য ডাক্তার হিসেবে আমরা আগে যেসকল সরঞ্জাম ব্যবহার করতাম- ১. ভেষজ পেষণী এবং দন্ড, ২. কাপিং হর্ন (শিঙ্গা), ৩. ভেষজ ঔষধ পানের পাত্র, ৪. সাধারণ মালিশ সরঞ্জাম, ইত্যাদি; |
কামার | কামারগণ আগে যেসকল সরঞ্জাম ব্যবহার করতো সেগুলোর মধ্যে- ১. ফর্গ, ২. অ্যানভিল, ৩. হাতুড়ি, ৪. চিমটি, ৫. ছেনি, ৬. খোঁচা, ৭. ফাইল এবং রাস্প; |
৫. আগের কাজের ক্ষেত্রে আপনি কেমন অনুভব করতেন?
কৃষক
আধুনিক হাতিয়ারের আগে, গ্রামের কৃষকরা কায়িক শ্রম এবং ঐতিহ্যগত কৃষি পদ্ধতির উপর নির্ভর করত। ক্ষেত চাষ করা থেকে শুরু করে বীজ বপন এবং ফসল তোলা পর্যন্ত তাদের কাজ ছিল শারীরিকভাবে পরিশ্রমের। আমরা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক সার ব্যবহার করতাম এবং চাষবাসের জন্য সম্পূর্ণ প্রকৃতির উপর নির্ভর করতাম।
অনেক সময় ঋতুর উপর নির্ভর করে আমাদের ফসলের অনেক ক্ষতি হতো কারন আমরা দূর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে পারতাম না। তাই আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতির মুখে পড়তাম।
গ্রাম্য ডাক্তার
আধুনিক সরঞ্জাম সহজলভ্য হওয়ার আগ পর্যন্ত গ্রামে চিকিৎসা সেবা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। সেসময় রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রথাগত বিভিন্ন পদ্ধতি এবং দেশীয় বিভিন্ন সরঞ্জামের উপর নির্ভর করতে হতো।
যেহেতু রোগ নির্ণয় করার জন্য আধুনিক সরঞ্জাম ছিল না তাই রোগ নির্ণয় কষ্টসাধ্য ছিল। নিজেদের অভিজ্ঞতা এবং প্রথাগত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা দিতে হতো।
রোগীদের সুস্থতায় সহযোগিতা না করতে পারলে তখন খুব খারাপ লাগতো। নিজেকে অপরাধী মনে হত। তবে আমরা সবটুকু দিয়ে চেষ্টা করতাম।
কামার
আধুনিক সরঞ্জাম সহজলভ্য হওয়ার আগে একজন কামারের কাজ অনেক কঠিন এবং শারীরিক পরিশ্রমের ছিল এবং দক্ষ কারিগর প্রয়োজন ছিল।
কামাররা ঐতিহ্যবাহী কৌশল ব্যবহার করত এবং ধাতুকে আকৃতি ও নকল করতে কায়িক শ্রমের উপর নির্ভর করত। তারা হাতুড়ি, অ্যাভিল এবং ফরজেসের মতো মৌলিক সরঞ্জামগুলির সাথে কাজ করেছিল, তাদের সম্প্রদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং সরঞ্জাম তৈরি করেছিল।
৬. নতুনভাবে কাজ করতে আপনার কেমন লাগে?
কৃষক
আধুনিক যন্ত্রপাতির প্রবর্তন গ্রামের কৃষকদের কাজে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে। ট্রাক্টর, হার্ভেস্টার এবং সেচ ব্যবস্থার মতো যান্ত্রিক সরঞ্জামের সাহায্যে, কৃষিকাজ আরও দক্ষ এবং কম শ্রম-ঘন হয়ে উঠেছে।
আধুনিক সরঞ্জামগুলি উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি করেছে, শারীরিক চাপ হ্রাস করেছে এবং সামগ্রিক ফলন উন্নত করেছে। কৃষকদের এখন উন্নত কৃষি প্রযুক্তি, নির্ভুল চাষের কৌশল এবং উন্নত স্টোরেজ এবং প্রক্রিয়াকরণ সুবিধার অ্যাক্সেস রয়েছে, যার ফলে লাভজনকতা এবং স্থায়িত্ব বৃদ্ধি পায়।
যাইহোক, যদিও আধুনিক সরঞ্জামগুলি অনেক সুবিধা নিয়ে এসেছে, কিছু কৃষক জমির সাথে সংযোগ এবং ঐতিহ্যগত অনুশীলনগুলিও মিস করতে পারে যা তাদের কাজে গভীরভাবে জড়িত ছিল।
গ্রাম্য ডাক্তার
গ্রামীণ চিকিৎসকদের কাজে আধুনিক যন্ত্রপাতির সহজলভ্যতা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। উন্নত চিকিৎসা সরঞ্জাম, ডায়াগনস্টিক টুলস এবং প্রযুক্তির সাহায্যে গ্রামের ডাক্তাররা তাদের রোগীদের রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং মানসম্পন্ন সেবা দেওয়ার ক্ষমতা বাড়িয়েছে।
যাইহোক, আধুনিক সরঞ্জামগুলির ব্যবহার ডাক্তার-রোগী সম্পর্কের গতিশীলতায় পরিবর্তন আনতে পারে এবং ঐতিহ্যগত নিরাময় অনুশীলনের সম্ভাব্য ক্ষতি পুষিয়ে আনতে সহযোগিতা করছে।
কামার
কামারদের কাজে আধুনিক হাতিয়ার সংযোজন ধাতব কাজের শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে। পাওয়ার হাতুড়ি, বায়ুসংক্রান্ত সরঞ্জাম এবং বৈদ্যুতিক ফোরজির মতো উন্নত সরঞ্জামগুলি ধাতুকে আরও দক্ষ এবং সুনির্দিষ্ট করে তৈরি করেছে।
আধুনিক সরঞ্জামগুলি উত্পাদনশীলতা বাড়িয়েছে, শারীরিক চাপ কমিয়েছে এবং কামারদের জন্য সৃজনশীল সম্ভাবনার পরিসরকে প্রসারিত করেছে।
যদিও এই সরঞ্জামগুলি অনস্বীকার্য সুবিধা নিয়ে এসেছে, কিছু কামারের ঐতিহ্যবাহী কৌশল এবং কারুশিল্পের জন্য একটি নস্টালজিক আকাঙ্ক্ষা থাকতে পারে যা আধুনিক সরঞ্জামের আবির্ভাবের আগে তাদের কাজের বৈশিষ্ট্যযুক্ত ছিল।
৭. এই যে পরিবর্তন হলো এর পিছনে কারণ কী বলে মনে করেন?
৮. আপনার পেশার জন্য শুরুতেই কী কী কাজ আপনাকে শিখতে হয়েছে?
৯. আপনার পেশায় পরিবর্তন আসার পর আপনাকে নতুন করে আর কী কী কাজ শিখতে হয়েছে বা হচ্ছে?
১০. আগামীতে আপনার পেশায় আর কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে বলে মনে করেন?
১১. পেশার কাজে নতুন যে পরিবর্তন আসতে পারে তার জন্য আপনার আর কী কী দক্ষতা অর্জন করা প্রয়োজন হতে পারে?
১২. আপনার পেশায় উক্ত নতুন পরিবর্তনের সাথে খাপ খাওয়ানোর জন্য বা আরও ভালো করতে হলে আর কী কী অনুশীলন বা চর্চা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন?
১৩. আপনার ভবিষ্যৎ বা আগামী পেশায় দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিশেষ প্রস্তুতি বা প্রশিক্ষণের সুযোগ কোথায় আছে বলে মনে করেন?
১৪. উক্ত প্রশিক্ষণ বা দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে এমন কয়েকটি স্থানীয় প্রতিষ্ঠান/ব্যক্তির নাম ঠিকানা বলুন?
১৫. আগামীতে আপনার কাজগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট নতুন কী কী পেশা আসতে পারে/ তৈরি হতে পারে বলে মনে করেন?
১৬. আগামীর সেই পেশাগুলোতে আপনি কাজ করতে চাইলে নতুন করে আপনাকে আর কী কী দক্ষতা অর্জন করতে হবে – ইত্যাদি?
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা নিয়ে প্রতিবেদন
সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বিষয়ের সামষ্টিক মূল্যায়ন প্রথম অ্যাসাইনমেন্ট পেশা জীবীদের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠান শেষে একটি প্রতিবেদন লিখতে হবে সেটি এবার দেওয়া হল।
প্রতিবেদনে যা যা থাকতে হবে তার সারসংক্ষেপ-
- পেশাজীবী ব্যক্তির বর্তমান পেশার নাম;
- তার পেশাক্ষেত্রে কী কী পরিবর্তন এসেছে তার বর্ণনা;
- পেশাক্ষেত্রে উক্ত পরিবর্তনের কারণগুলো কী তা বিশ্লেষণ;
- উক্ত পরিবর্তনের ফলে পেশায় কী ধরনের নতুনত্ব এসেছে তার বর্ণনা;
- পরিবর্তনের কারণে নতুন আরও কী কী পেশা সৃষ্টি হতে পারে;
- উক্ত পেশার জন্য কী কী দক্ষতা থাকা প্রয়োজন তা চিহ্নিতকরণ;
- দক্ষতাসমূহ অর্জনের জন্য তার এলাকায় কী কী সুযোগ রয়েছে তার বর্ণনা;
- দক্ষতা উন্নয়ন/প্রশিক্ষণের জন্য স্থানীয় প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা;
নমুনা প্রতিবেদন
শিক্ষার্থীর নাম: ………………. আইডি/রোল: …………………….. শ্রেণি: সপ্তম
প্রতিবেদনের তারিখঃ ০৮ জুন ২০২৩, বিকাল ০৩ ঘটিকা
বিষয়ঃ পেশীজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা ও পেশার রূপ বদল
আজ ০৮ জুন ২০২৩, রোজ-বৃহস্পতিবার, সকাল ১০ ঘটিকায় আজিয়ারা উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বিষয়ের ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের দিন পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আমি একজন কৃষক এর সাক্ষাৎকার/মতামত গ্রহণ করেছিলাম। তাঁর সাথে আলোচনার মাধ্যমে কৃষি পেশার অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ধারণা পাওয়া গেল তা উল্লেখ করলাম।
পেশাজীবীর বর্তমান পেশা:
তিঁনি একজন গ্রাম্য কৃষক। জমিতে ধানসহ বিভিন্ন ফসল ফলান প্রায় ১৫ বছর কৃষির সাথে সম্পৃক্ত আছেন। তিনি কৃষি পেশার অতীত ও বর্তমানের বিষয়গুলো সম্পর্কে ভালোই ধারণা রাখেন।
কৃষি পেশায় পরিবর্তন সমূহ:
বর্তমানে উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কারের ফলে বাংলাদেশের কৃষিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। পূর্বে আমাদের কৃষকরা হাতে বানানো এবং দেশীয় বিভিন্ন প্রথাগত সরঞ্জাম ব্যবহার করতো যাতে সময় এবং শারীরিক পরিশ্রম বেশি হতো। সেই তুলনায় ফলনের পরিমাণ কম ছিল।
কিন্তু বর্তমানে আধুনিক বিভিন্ন মেশিন এবং উপকরণ সহজলভ্য হওয়ায় কৃষি পেশায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এখন প্রায় সকল কাজের জন্য সয়ংক্রীয় মেশিন রয়েছে। তাই কাজের সময় যেমন কমেছে, তেমনি উৎপাদন বেড়েছে বহুগুণ।
আগে প্রকৃতির উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করতে হতো। কৃষকরা আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে পারতোনা বলে কোনো প্রাকৃতিক দূর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হতো না। বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে আবহাওয়া পূর্বাভাস জানা যায় মোবাইলেই। তাই যেকোন সমস্যার পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ করা যায়।
এই সময়ে কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিক্রয় করার জন্য আর ঝামেলায় পড়তে হয়না। ঘরে বসেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রেতার কাছে ফসল বিক্রয় করা যায় এবং বিদেশেও রপ্তানী করা যায়।
পেশাক্ষেত্রে উক্ত পরিবর্তনের কারণগুলো কী তা বিশ্লেষণ
পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা তে কৃষি পেশায় পরিবর্তনের পেছনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে যা অতিথির সাথে আলোচনার মাধ্যমে জানা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল-
১. শিক্ষার হার বৃদ্ধি: বর্তমানে সবাই লিখতে এবং পড়তে পারে। শিক্ষার হার বৃদ্ধির কারনে এখনকার কৃষকরা যেকোন বিষয়ের সমস্যা হলে নিজেরাই বিভিন্ন পত্র/পত্রিকা এবং বই পড়ে সমাধান করে নিতে পারে।
২. প্রযুক্তির সহলভ্যতা: এই সময়ে প্রযুক্তির ব্যবহার সবত্র। আমরা সবাই এখন প্রযুক্তি ছাড়া একটি দিনও কল্পনা করতে পারিনা। মানব জীবনের অন্যন্য ক্ষেত্রের মত কৃষি পেশায় প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগে অভূতপূর্ব পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এখন কৃষকরা তাদের ফসলের বিভিন্ন সমস্যা মোবাইলের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সমাধান করে নিতে পারে।
তাদের উৎপাদিত পণ্য দেশে এবং বিদেশের বাজারে বিক্রয় করে প্রচুর অর্থ উপার্জন করতে পারে। কাজ সহজ হয়ে যাওয়া এবং উপার্জন বেড়ে যাওয়ায় অনেক শিক্ষিত মানুষ বর্তমানে কৃষি পেশায় আসছে ফলে কৃষিতে পরিবর্তন খুব দ্রুত হচ্ছে।
৩. উন্নত মেশিন বা যন্ত্রের ব্যবহার: পূর্বে কৃষকরা সম্পূর্ণ শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে কৃষি কাজ করতো। যেমন- নিজেরা বা গবাদী পশু দিয়ে হাল চাষ করানো। নিজেদের জমিন থেকে পানি পরিবহন করে সেচ দেওয়া। আগাছা পরিষ্কার করাসহ অন্যন্য সকল কাজই সনাতন পদ্ধতিতে করতে হতো।
কিন্তু বর্তমানে কৃষিতে প্রয়োজন প্রায় সকল কাজের জন্যই উন্নত প্রযুক্তির মেশিন প্রস্তুত হয়েছে। এবং সেগুলো বাংলাদেশের কৃষকরাও ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে। কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তির মেশিন ব্যবহারের কারনে এই পেশায় দারুন পরিবর্তন এসছে।
পরিবর্তনের ফলে পেশায় যে ধরনের নতুনত্ব এসেছে
কৃষি পেশায় পরিবর্তনগুলো এই পেশায় অনেক ধরনের নতুনত্ব নিয়ে এসেছে। তা নিম্নে সংক্ষেপে বলা হয়-
১. নতুন ক্ষেত্র সৃষ্টি: আগে এক অঞ্চলের কৃষকরা অন্য অঞ্চলের ফলস ফলাতে পারতো না। কিন্তু এখন প্রায় সব এলাকায় স্ ধরনের ফসল ফলানো সম্ভব হয়।
২. প্রকৃতি নির্ভরশীলতা কমেছে: পূর্বে শতভাগ প্রকৃতির উপর নির্ভর করে থাকতে হতো। কিন্তু এখন উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে সেচ দেওয়া সহ বিভিন্ন কাজ সহজেই করা যায় বিধায় উৎপাদন ত্বরান্বিত হয়েছে।
৩. সময় কমেছে: আগে শারীরিকভাবে পরিশ্রম আর সরঞ্জামের ব্যবহার সহজলভ্য না থাকায় যেকোন কৃষি কাজ করতে সময় বেশি লাগতো। কিন্তু এখন কৃষিতে প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সময় কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।
৪. যান্ত্রিকীকরণ: ট্রাক্টর, কম্বাইন এবং হার্ভেস্টারের মতো যন্ত্রপাতির প্রবর্তন কায়িক শ্রমকে ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে এবং কৃষিকাজ পরিচালনার গতি ও নির্ভুলতা বাড়িয়েছে।
পরিবর্তনের কারণে নতুন আরও যেসকল পেশা সৃষ্টি হতে পারে
বাংলাদেশের মতো কৃষি প্রধান দেশে কৃষিকাজ করার পদ্ধতিতে পরিবর্তন এবং নতুনত্বের কারণে এই খাতে বেশ কয়েকটি নতুন পেশা উদ্ভব হতে পারে। (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা তে আলোচনার আলোকে)
কৃষি জলবায়ু এক্সপার্ট:
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এখানে কৃষি কাজে সহযোগিতা করতে স্মার্ট জলবায়ুবিদ প্রয়োজন। জলবায়ুর পরিস্থিতি পরিবর্তনের সাথে চাষের বিভিন্ন কৌশল গুলো অবলম্বন করা এবং ফসলের জাত বাস্তবায়নে স্মার্ট জলবায়ু কৃষি পাওয়ার পেশাটি তৈরি হতে পারে এবং এতে প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
জৈব সার্টিফিকেশন পরিদর্শক
সম্ভাব্য এই পেশার কর্মীরা কৃষি কাজে জৈব পণ্যের ব্যবহার নিয়ে বিস্তর গবেষণা করে উন্নত কৃষি বাস্তবায়ন করার জন্য বিভিন্ন জৈব পণ্যের প্রচার ও প্রসার করবে। রাসায়নিক দ্রব্যের পরিবর্তে জৈব পণ্যের ব্যবহারকে নিশ্চিত করার জন্য তারা কাজ করতে পারে। এই কাজের প্রবল চাহিদা রয়েছে ভবিষ্যতে।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা:
সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা কৃষকদের কাছে কৃষি জ্ঞান ও প্রযুক্তি প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশে, বিপুল সংখ্যক ক্ষুদ্র কৃষকের সাথে, আরও সম্প্রসারণ কর্মকর্তার প্রয়োজন হতে পারে যারা কৃষি অনুশীলনের উন্নতি, উত্পাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ জীবিকা বাড়াতে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং সংস্থান সরবরাহ করতে পারেন।
গ্রামীণ কৃষি উদ্যোক্তা:
বাংলাদেশের একটি প্রাণবন্ত গ্রামীণ অর্থনীতি রয়েছে, এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর চাহিদা পূরণ করে এমন ব্যবসা তৈরি করার জন্য কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ থাকতে পারে। এই উদ্যোক্তারা গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রেখে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, কৃষি-ইনপুট সরবরাহ, মূল্য সংযোজন প্রক্রিয়াকরণ, ফসলোত্তর ব্যবস্থাপনা, বা কৃষি-পর্যটন সম্পর্কিত উদ্যোগ স্থাপন করতে পারে।
কৃষি-বাজার বিশ্লেষক:
কৃষি মূল্য শৃঙ্খল এবং বাজার সংহতকরণের প্রসারের সাথে, কৃষি-বাজার বিশ্লেষকরা বাজারের প্রবণতা নিরীক্ষণ করবে, মূল্য বিশ্লেষণ পরিচালনা করবে এবং কৃষকদের বাজারের চাহিদা, ভোক্তাদের পছন্দ এবং মূল্য সংযোজন সুযোগ সম্পর্কে মূল্যবান তথ্য সরবরাহ করবে। তারা কৃষকদের ফসল নির্বাচন, বিপণন কৌশল এবং মূল্য শৃঙ্খলে অংশগ্রহণের বিষয়ে সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
কৃষি পেশার জন্য যেসকল দক্ষতা থাকা প্রয়োজন
বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কৃষির সাথে খাপ কমানোর জন্য এবং এই পেশায় সফলতা অর্জন করতে হলে কৃষকদের বেশ কিছু দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে (পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠানে যেগুলো উঠে আসলো):
১. প্রযুক্তি জ্ঞান:
বর্তমানে কৃষির প্রায় সকল কাজেই ডিজিটাল প্রযুক্তি সমৃদ্ধ মেশিন পত্র ব্যবহার হচ্ছে। তাই একজন কৃষককে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে এ বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা যাবে।
নির্ভূল কৃষি যন্ত্রপাতি ব্যবহার এবং উৎপাদিত ফসল ব্যবস্থাপনা, বিপনন এর জন্য বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে কৃষকদের প্রযুক্তি জ্ঞান থাকতে হবে।
২. তথ্য বিশ্লেষন ও ব্যাখ্যা:
কৃষি পেশায় উন্নতী করতে এবং সফল হওয়ার জন্য কৃষির সাথে সম্পৃক্ত বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যা করার দক্ষতা থাকতে হবে একজন কৃষকের।
৩. অভিযোজনযোগ্যতা এবং সমস্যা-সমাধান:
কৃষি সহ সকল প্রেশায় সময়ের সাথে পরিবর্তন সাধিত হয়। এবং একে প্রান্তের কৃষিকাজ একেক রকম হয়ে থাকে এবং সময়ের সাথে সেটি আবহাওয়া এবং জলবায়ুর কারণে পরিবর্তিত হয়। বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে কৃষকদের আবহাওয়া এবং জলবায়ু ও স্থান কাল পাত্র ভেবে অভিযোজন ক্ষমতা এবং সমস্যা সমাধান সংক্রান্ত যোগ্যতা সমূহ অর্জন করতে হবে।
আধুনিক কৃষি জলবায়ু পরিবর্তন, বাজারের ওঠানামা এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সহ বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সাপেক্ষে। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতা, সমালোচনামূলকভাবে চিন্তা করা এবং সৃজনশীলভাবে সমস্যাগুলি সমাধান করার ক্ষমতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পেশাদারদের অবশ্যই নমনীয়, স্থিতিস্থাপক এবং জটিল কৃষি সমস্যা সমাধানের জন্য উদ্ভাবনী সমাধান অন্বেষণ করতে ইচ্ছুক হতে হবে।
৪. টেকসই এবং পরিবেশগত সচেতনতা:
স্থায়িত্বের উপর ক্রমবর্ধমান জোর দেওয়া, আধুনিক কৃষিতে পেশাদারদের টেকসই চাষের অনুশীলন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে দৃঢ় ধারণা থাকা উচিত। জৈব চাষ, সংরক্ষণ কৃষি, জল দক্ষতা, এবং জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জ্ঞান পেশাদারদের টেকসই এবং পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতির প্রচার করতে পারে।
৫. ব্যবসা এবং আর্থিক দক্ষতা: কৃষি পেশাদারদের জন্য ব্যবসায়িক নীতি, আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং বাজারের গতিশীলতার একটি দৃঢ় উপলব্ধি অপরিহার্য। বাজেটিং, খরচ বিশ্লেষণ, বাজার গবেষণা এবং বিপণন কৌশলগুলিতে দক্ষতা ব্যক্তিদের জ্ঞাত সিদ্ধান্ত নিতে, কার্যকরভাবে খামার অর্থ পরিচালনা করতে এবং কৃষি বাজারে লাভজনক সুযোগ সনাক্ত করতে দেয়।
৬. যোগাযোগ এবং সহযোগিতা: কার্যকর যোগাযোগ এবং সহযোগিতার দক্ষতা আধুনিক কৃষি কর্মজীবনে গুরুত্বপূর্ণ। পেশাদারদের অবশ্যই কৃষক, গবেষক, নীতিনির্ধারক এবং শিল্প বিশেষজ্ঞ সহ বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে যোগাযোগ করতে সক্ষম হতে হবে। দৃঢ় আন্তঃব্যক্তিক দক্ষতা, বহুবিষয়ক দলে কাজ করার ক্ষমতা এবং জটিল তথ্য পরিষ্কার ও সংক্ষিপ্তভাবে প্রকাশ করার ক্ষমতা সাফল্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৭. ধারাবাহিক শিক্ষা এবং অভিযোজন: কৃষি হল একটি গতিশীল ক্ষেত্র যেখানে বিকশিত প্রযুক্তি, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং বাজারের চাহিদার পরিবর্তন। আধুনিক কৃষিতে পেশাজীবীদের আজীবন শেখার প্রতি অনুরাগ থাকতে হবে, সর্বশেষ শিল্প প্রবণতাগুলির সাথে আপডেট থাকতে হবে এবং কৃষি খাতে অগ্রগতির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তাদের দক্ষতা ও জ্ঞানকে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, এই ছিল তোমাদের জন্য পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন সংক্রান্ত বিভিন্ন কার্যক্রম এর নমুনা কাজ। আশা করছি তোমরা খুব ভালোভাবে সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা অ্যাসাইনমেন্ট পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত করতে পারবে।
এছাড়াও সকল বিষয়ের নমুনা উত্তর সমূহ পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক গ্রুপ জয়েন করে নাও ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করো এবং ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন। তোমার বন্ধুকে বিষয়টি জানানোর জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি তার খাতায় নোট করে দিতে পারো।
সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা অন্যন্য অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান
পেশাজীবীর সাথে মত বিনিয়ম ছাড়াও ৭ম শ্রেণির ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন জীবন ও জীবিকা বিষয়ের আরও দুটো কাজ আছে। অধ্যয়ন টিম শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ের সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে সেগুলোর নমুনা উত্তর প্রস্তুত করেছে।
নিচের কাঙ্খিত বিষয়ের লেখার উপর ক্লিক করে তোমার অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর দেখে নাও-
- পেশাজীবীর সাথে মতবিনিময় সভা আয়োজন এবং প্রতিবেদন প্রস্তুত
- সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে নিজ পরিবারের জন্য একটি পারিবারিক বাজেট প্রণয়ন
- নিজ পরিবারে আর্থিক সহযোগিতার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন
3 Comments
Pingback: সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা ষাণ্মাসিক মূল্যায়ন প্রশ্ন ও নমুনা উত্তর - অধ্যয়ন
Pingback: সংগৃহীত তথ্যের মাধ্যমে নিজ পরিবারের জন্য একটি পারিবারিক বাজেট প্রণয়ন - অধ্যয়ন
Pingback: মহান আল্লাহর পরিচয় ও প্রশংসামূলক (তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাত) সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইসলামি সঙ্গীত - অধ