আপনি এখানে আছেন কারণ সম্ভবত আপনি পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন। জাতীয় সংসদ নির্বাচন সহ দেশের বিভিন্ন নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্বাচনী নীতিমালার সিরিজে আপনাকে স্বাগতম। আজকে আমরা জানবো পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন কি, কিভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে হয় এই সংক্রান্ত সকল বিষয় নিয়ে।
পূর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম নির্বাচনী এজেন্ট এবং পােলিং এজেন্ট নির্বাচনী এজেন্ট কারা এবং কিভাবে তাদের নিয়োগ দিতে হয় সে বিষয়ে। চলুন তাহলে আজকের আলোচনায় ফেরা যাক।
পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২-এর ২৭ অনুচ্ছেদের (২) দফা অনুসারে ভােটার তালিকা অধ্যাদেশ, ১৯৮২-এর ৮ ধারার (২), (৩) অথবা (৪) উপ-ধারায় বর্ণিত ভােটার হিসাবে তালিকাভুক্ত সরকারী বা পাবলিক অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা বা কর্মচারী বা তাহাদের স্ত্রী বা স্বামী বা পুত্র বা কন্যা এবং সরকারী হেফাজতে বা জেলখানায় আটক ব্যক্তিগণ পােস্টাল ব্যালট পেপারে ভােটদানে ইচ্ছুক হইলে নির্বাচনী সময়সূচী জারীর পর,
১৫ দিনের মধ্যে এবং নির্বাচনের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ নির্বাচনের কাজে নিয়ােগপ্রাপ্ত ইবার সঙ্গে সঙ্গে তাহাদের নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসারের নিকট ভােটদানের জন্য দরখাস্ত দাখিল করিতে পারিবেন। উক্ত আবেদন সম্বলিত দরখাস্তে ভােটারের নাম, ঠিকানা এবং ভােটার তালিকায় তাহার ক্রমিক নম্বর লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। (পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান)
২। রিটার্নিং অফিসার উল্লিখিত আবেদন প্রাপ্তির পর পরই সংশ্লিষ্ট ভােটারের নিকট একটি ব্যালট পেপার এবং তদসঙ্গে একটি ইনভেলাপ প্রেরণ করিবেন।
উক্ত ইনভেলাপের উপর ভােটার কর্তৃক যথারীতি পূরণকৃত ইনভেলাপটি ডাক বিভাগের উপযুক্ত কর্মকর্তার দ্বারা সার্টিফিকেট অব পােস্টিং-এর মাধ্যমে ডাকযােগে প্রেরণের প্রত্যায়নসহ তারিখ উল্লেখ থাকিবে।
সার্টিফিকেট অব পােস্টিং-এর মাধ্যমে পােস্টাল ব্যালট পেপার গ্রহণ এবং চিঠির উপর এ সম্পর্কে রাবার স্ট্যাম্পের সীল ব্যবহার করিতে হইবে।
রিটার্নিং অফিসার সঙ্গে সঙ্গে ডাকযােগে ভােটদানের যােগ্য ব্যক্তিগণের নিকট ব্যালট পেপার প্রেরণ করিবেন এবং একই সাথে-
(ক) যাহার নিকট ব্যালট পেপার প্রেরণ করা হইবে তাহার নাম, সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার নাম এবং ভােটার তালিকায় বর্ণিত ক্রমিক নম্বর ইস্যুকৃত ব্যালট পেপারের মুড়িপত্রে লিপিবদ্ধ করিবেন।
(খ) সংশ্লিষ্ট ভােটকেন্দ্রে যাহাতে উল্লিখিত ভােটার ভােট প্রদান করিতে পারে তাহা নিশ্চিত করিবেন।
৪। ব্যালট পেপারের সঙ্গে রিটার্নিং অফিসার নিমােক্ত ফরমগুলি সংশ্লিষ্ট ভােটারের নিকট পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান এর জন্য প্রেরণ করিবেন:
(ক) Form VIII-এ নির্ধারিত একটি ঘােষণা ফরম,
(খ) Form IX-এ নির্ধারিত একটি ইনভেলাপ,
(গ) Form X-এ নির্ধারিত রিটার্নিং অফিসারের উদ্দেশ্যে একটি বড় ইনভেলাপ, এবং
(ঘ) Form XI-এ নির্ধারিত ভােটারের জন্য নির্দেশাবলী।
প্রত্যেক কর্মকর্তা যাহার অধীনে ও মাধ্যমে ডাকযােগে ব্যালট পেপার প্রেরণ করিতে হইবে তাহাকে অযথা বিলম্ব না করিয়া সঠিকভাবে পােস্টাল ব্যালট পেপারটি প্রাপকের নিকট পৌছানাের বিষয়টি নিশ্চিত করিতে হইবে।
৫। পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান এর জন্য ব্যালট পেপারগুলি সকল ভােটারের নিকট প্রেরণ করিবার পর রিটার্নিং অফিসার ব্যালট পেপারগুলির মুড়িপত্র একটি প্যাকেটে সীলগালা করিয়া প্যাকেটের উপর প্যাকেটে রক্ষিত দ্রব্যাদির নাম, নির্বাচনী এলাকার নাম এবং সীলগালা করিবার তারিখ লিপিবদ্ধ করিবেন।
- আরও পড়ুনঃ নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সময়সূচী জারী এবং রিটার্নিং অফিসারের অনুসরণীয় এবং করণীয় দায়িত্বাবলী
৬। ভােটার উক্ত ব্যালট পেপার প্রাপ্তির পর যাহাকে ভােট দিবেন ব্যালট পেপারে সেই প্রার্থীর নাম এবং প্রতীকের জন্য রক্ষিত জায়গায় পেন অথবা পেন্সিল দ্বারা ভােটদানের চিহ্নস্বরূপ ক্রস চিহ্ন (x) দিবেন। ব্যালট পেপারে ভােট রেকর্ড করিবার সময় ফরম-১১ (Fom XI)-এ প্রদত্ত নির্দেশাবলী অনুসরণপূর্বক ফরম-৯ (Form IX)-এ নির্ধারিত ইনভেলাপে রাখিবেন।
৭। ভােটার তাঁহার সহিত ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত বা কোন ব্যক্তির সন্তোষমতে সনাক্তকৃত একজন গেজেটেড অফিসার বা কমিশন্ড অফিসার-এর সম্মুখে স্বাক্ষর সত্যায়নপূর্বক নির্ধারিত ফরম VIII এ পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান এর জন্য তাঁহার ঘােষণাপত্র স্বাক্ষর করিবেন।
অশিক্ষিত এবং পঙ্গু ভােটার ভােট রেকর্ডে এবং ঘােষণাপত্রে স্বাক্ষরদানে অক্ষম হইলে তিনি রিটার্নিং অফিসারের নিকট হইতে প্রাপ্ত ঘােষণাপত্রের ফরম এবং কভারসহ পােস্টাল ব্যালট পেপারটি একজন গেজেটেড কর্মকর্তা অথবা কমিশণ্ড কর্মকর্তার নিকট লইয়া আসিবেন এবং
উক্ত কর্মকর্তাকে তাহার ব্যালট পেপারে তাহার পক্ষে ভােট রেকর্ড করাইতে এবং ঘােষণাপত্রে স্বাক্ষর দানের জন্য অনুরােধ করিতে পারেন।
উক্ত কর্মকর্তা ভােটারের অনুরােধ অনুযায়ী ভােটারের উপস্থিতিতে ব্যালট পেপারে ভােটারের পক্ষে ভােট প্রদানের জন্য চিহ্ন দিবেন, ঘােষণা ফরমে স্বাক্ষর দিবেন এবং ফরম VIIIএ যথাযথভাবে প্রত্যয়নের কাজ সম্পন্ন করিবেন।
৮। যদি কোন ব্যালট পেপার প্রাপকের নিকট ডেলিভারী না হইয়া ফেরত আসে তবে রিটার্নিং অফিসার পুনরায় তাহার নিকট ব্যালট পেপার প্রেরণ করিতে পারিবেন। যদি কোন ব্যালট পেপার ভােটার কর্তৃক অনিচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট হয় তবে রিটার্নিং অফিসার তাহার স্বাক্ষরে ব্যালট পেপার বাতিল করিতে পারিবেন।
৯। ফলাফল একত্রীকরণের সময় ডাকযােগে প্রাপ্ত ব্যালট পেপার গণনা করিবার জন্য রিটার্নিং অফিসারকে নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা (The Conduct of Elections Rules, 1972)-এর ২৫ বিধি (১০) উপ-বিধিতে পদ্ধতিগুলি অনুসরণ করিতে হইবে।
১০। অতএব, উল্লিখিত পদ্ধতিতে ডাকযােগে পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান যােগ্য ব্যক্তিরা যাহাতে ভােটাধিকার প্রয়ােগ করিতে পারেন তাহা রিটার্নিং অফিসারকে নিশ্চিত করিতে হইবে।
পােস্টাল ব্যালটে ভােটদান পদ্ধতি: এই তথ্যটি কোনো প্রকার ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয় বরং জনগণের কল্যাণে বহুল প্রচারের লক্ষ্যে অধ্যয়ন ডট কম এর পাঠকদের সুবিদার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। এটি সরাসরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সূত্র থেকে সংগৃহিত। এতে কারও কোনো আপত্তি থাকলে রিমুভ করার অনুরোধ করতে পারেন: [email protected] অথবা সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
অধ্যয়ন ডট কম এর সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেইজটি লাইক ও ফলো রাখুন এবং ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। প্রতিদিন শিক্ষা সংক্রান্ত সকল তথ্য পেতে আমাদের দৈনিক শিক্ষা ক্যাটাগরি দেখুন।