সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার। এই কারনেই তৈরি হয়েছে ডিজিটাল নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা। আমরা যেমন ব্যবহারিক জীবনে ব্যক্তিগত বিভিন্ন জিনিসের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন কলাকৌশল ব্যবহার করি। ঠিক তেমনি প্রযুক্তির এই সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে।
জাতীয়-আন্তর্জাতিক ও ব্যক্তিগত পর্যায়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। আজকে আমরা জানার চেষ্টা করবো বর্তমান সময়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা কী, এটি কেন প্রয়োজন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা
তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে বাড়ছে ব্যক্তিগত কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট তথা আইসিটির ব্যবহার।
অনলাইন স্পেসে আমাদের ব্যবহার যেমন বাড়ছে, তেমনি বেড়ে চলছে সাইবার ক্রাইম অর্থাৎ ইন্টারনেট এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ, যা এখন পুরো বিশ্বে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
সাইবার অপরাধীরা অনলাইন এ্যাকাউন্ট, ই-মেইল, ওয়েবসাইটইত্যাদি হ্যাকিং এর মাধ্যমে প্রতারণা, ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চুরি, ব্ল্যাকমেইল, পর্ণোগ্রাফি, হয়রানি, হুমকি দান, সাম্প্রদায়িকউস্কানি সহ নানান জটিল সমস্যার সৃষ্টি করছে।
- আরও পড়ুনঃ প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটির তালিকা ২০২৩
নিচের ভিডিওতে ডিজিটাল নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু তথ্য পাওয়া যায়
ডিজিটাল নিরাপত্তার’র ধারণা
চলুন জেনে নিউ ডিজিটাল নিরাপত্তার’র ধারণা সম্পর্কে। এই বিষয়ে বলার আগে আপনার নিকট থেকে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন-
১. আপনি কি রাতে ঘুমাবার সময় বাসার দরজা খুলে রাখবেন?
২. বিদ্যুৎ আছে কিনা সেটা জানার জন্য ইলেকট্রিক তারে হাত দিবেন?
২. আপনি কি সাইন করা ব্লাংক চেকের পাতা রাস্তায় ফেলে রাখবেন?
তিনটা প্রশ্নেরই উত্তর নিশ্চয়ই “না”, কেননা নিজের নিরাপত্তার এই সাধারণ বিষয়গুলাে তাে আমরা সবাই জানি। কিন্তু ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়ে কি আমরা সবাই সচেতন?

এই ছবিগুলাের মত আপনিও নিশ্চয়ই দরজা খােলা রেখে ঘুমাতে যাওয়া, খলি হাতে ইলেকট্রিক তারে হাত দেয়া কিংবা সাইন করা ব্লাংক চেকের পাতা রাস্তায় ফেলে রাখার মত কাজগুলাে করবেন না।
অনেক সময় আপনি হয়তাে কম্পিউটারে ফেইসবুক অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ইমেইল খুলে রেখে কোথাও চলে যাচ্ছেন। কিংবা অপিরিচিত ব্যাক্তির দেয়া লােভনীয় কোন অফারের লিংকে ক্লিক করছেন।
আবার অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে শপটি যাচাই না করেই দিয়ে দিচ্ছেন ক্রেডিট কার্ড বা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সকল তথ্য।
কখনাে কি ভেবে দেখেছেন, ইন্টারনেট ব্যবহারে এরকম উদাসীনতা আপনার জন্য কতটা ক্ষতিকর এবং এভাবে তথ্য নিয়ে যেকেউ যেকোন কিছুই করতে পারে?
এভাবে আপনি যে শুধু নিজের বিপদই ডেকে আনছেন তাই না, অনেক ক্ষেত্রে কর্মস্থলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও চলে যায় অন্যের হাতে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতার প্রয়োজনীয়তা
ডিজিটাল বাংলাদেশের পথ চলার সাথে সাথে বাড়ছে ব্যক্তিগত কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক কাজে কম্পিউটার, স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট তথা আইসিটির ব্যবহার।
সাইবার স্পেসে আমাদের উপস্থিতি যেমন বাড়ছে, তেমনির বেড়ে চলছে সাইবার ক্রাইম অর্থাৎ ইন্টারনেট এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে সংঘটিত অপরাধ, যা এখন পুরাে বিশ্বে ব্যপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
সাইবার অপরাধীরা অনলাইন এ্যাকাউন্ট, ই-মেইল, ওয়েবসাইট ইত্যাদি হ্যাকিং এর মাধ্যমে প্রতারণা, ক্রেডিট কার্ডের নম্বর চুরি, ব্ল্যাকমেইল, পর্ণোগ্রাফি, হয়রানি, হুমকি দান, সাম্প্রদায়িক উস্কানি সহ নানান জটিল সমস্যার সৃষ্টি করছে।
২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, সাইবার অপরাধীদের বিশ্বব্যাপী বাৎসরিক আয়ের পরিমাণ প্রায় ১.৫ট্রিলিয়ন ডলার, যার অর্ধেকেরও বেশি প্রায় ৮৬০ বিলিয়ন ডলারই এসেছে অবৈধ ও গােপনীয় তথ্যের বাজার থেকে।
এই অবস্থায় আমরা কেউই সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকির বাইরে নই, তাই সময় থাকতে সাবধান না হলে যেকোন সময় আপনিও হয়ে যেতে পারেন সাইবার অপরাধের ভুক্তভােগী।
সকল সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ডিজিটাল নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন করতে এই অনলাইন কোর্সটি তৈরি করা হয়েছে।
অনলাইন এবং মােবাইল অ্যাপস্ এর মাধ্যমে এটুআই’র ই-লার্নিং প্লাটফর্ম- ‘মুক্তপাঠ’ থেকে এই কোর্সটি করে খুবই অল্প সময়ে জানতে পারবেন ডিজিটাল নিরাপত্তার খুটিনাটি বিষয়াদি।
এই কোর্সে ডিজিটাল নিরাপত্তার ধারণা, সােশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ব্যবহার এবং অনলাইনে লেনদেনের প্রয়ােজনীয় সতর্কতা ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতার ধারণা ও প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর
আশা করছি এই পাঠটি আপনি মনযোগ দিয়ে পড়েছেন। তাহলে চলুন ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতার ধারণা ও প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নোত্তর জেনে নেওয়া যাক। এখানে আপনাকে কিছু প্রশ্ন করা হবে এগুলো উত্তর আপনি এই আর্টিকেল এর কমেন্ট সেকশনে লিখবেন-
প্রশ্ন-১: অফিসিয়াল তথ্য চুরি হয়ে যাওয়ার জন্য কোনটি দায়ী?
ক. কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতীত অন্যত্র যাবার কারণে
খ. কম্পিউটার খোলা রেখে অন্যত্র যাবার কারণে
গ. ইন্টারনেটের অত্যধিক ব্যবহারের কারণে
ঘ. সময়মত কম্পিউটার বন্ধ না করার কারণে
প্রশ্ন-২: নিচের কোনটি সাইবার নিরাপত্তার অংশ?
ক. ব্যাংকের চেক নিরাপদ স্থানে সংরক্ষণ করা
খ. ব্যাংক একাউন্ট নম্বর কাউকে না জানানো
গ. ক্রেডিট কার্ডের নম্বর কাগজে লিখে রাখা
ঘ. অনলাইন একাউন্ট ব্যবহারের পর সাইন আউট করা
প্রশ্ন-৩: সাইবার অপরাধীদের বার্ষিক আয়ের পরিমাণ কত?
ক. ১.৫ ট্রিলিয়ন ডলার;
খ.২.৫ ট্রিলিয়ন ডলার;
গ. ৩.৫ ট্রিলিয়ন ডলার;
ঘ. ৫.৫ ট্রিলিয়ন ডলার;
প্রশ্ন-৪: সাইবার অপরাধীরা কীভাবে অপরাধ সংঘঠিত করে?
ক. মোবাইল ফোন চুরি করে;
খ. অনলাইন একাউন্ট হ্যাক করে;
গ. ইন্টারনেটে ভাইরাস ছড়িয়ে;
ঘ. অনলাইনে ট্রান্সেকশনের মাধ্যমে;
প্রশ্ন-৫: সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নিচের কোনটি গুরুত্বপূর্ণ?
ক. বৈদ্যুতিক যংন্ত্রাংশ ব্যবহারে সতর্ক হওয়া;
খ. অফিসিয়াল গুরুত্বপূর্ণ একাউন্ট সাইন আউট করা;
গ. অনলাইনে লোভনীয় অফারের লিংকে ক্লিক করা;
ঘ. অনলাইনে শপিং লিংক যাচাই না করে ক্রেডিট;
ডিজিটাল নিরাপত্তা সচেতনতার ধারণা ও প্রয়োজনীয়তা: এই তথ্যটি কোনো প্রকার ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে নয় বরং জনগণের কল্যাণে বহুল প্রচারের লক্ষ্যে অধ্যয়ন ডট কম এর পাঠকদের সুবিদার্থে প্রকাশ করা হয়েছে। এটি সরাসরি বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর সূত্র থেকে সংগৃহিত। এতে কারও কোনো আপত্তি থাকলে রিমুভ করার অনুরোধ করতে পারেন: OdhayonOnline@gmail.com অথবা সরাসরি আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
অধ্যয়ন ডট কম এর সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেইজটি লাইক ও ফলো রাখুন এবং ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন। প্রতিদিন শিক্ষা সংক্রান্ত সকল তথ্য পেতে আমাদের দৈনিক শিক্ষা ক্যাটাগরি দেখুন।
3 Comments
Pingback: ফেসবুক ব্যবহারের সাইবার ঝুঁকি এবং নিরাপদ থাকার উপায় - অধ্যয়ন
Pingback: ভুয়া খবর সনাক্ত করার ৫টি সহজ উপায় ও করণীয় - অধ্যয়ন
Pingback: প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগে ইমেইলের ব্যবহার ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা - অধ্যয়ন