সবারই জীবনে এমন কিছু সময় আসে যখন আমাদের জরুরি সহায়তা বা তথ্য জানার প্রয়োজন হয়। এই সেবা আমরা ব্যক্তি বা সংস্থা হতে পাই। কিন্তু এর জন্য আমাদের কিছু বিষয় বিবেচনা করে ধাপে ধাপে সম্পন্ন করে সেবা নিতে হয়। কীভাবে প্রয়োজনের সময় খুব সহজে আমরা জরুরি সেবা পাব সেই যোগ্যতাটি এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জন করব।
তাছাড়া আমাদের বিদ্যালয়ে জরুরি সেবার একটি তথ্যকেন্দ্র থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ। সে জন্যও আমরা বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে একটি জরুরি সেবার তথ্যকেন্দ্ৰ সাজাব।
সেশন-১: জরুরি সেবার ধারণা এবং এলাকাভিত্তিক জরুরি সেবার তালিকা প্রস্তুত
(চলো সাজাই জরুরি) প্রিয় শিক্ষার্থী, তোমাদের শুভেচ্ছা। আগের অভিজ্ঞতাগুলোর মতো এখানেও আমরা ধাপে ধাপে কিছু কাজ করব। আমাদের জীবনে অনেক সময় এমন কিছু বিপদ আসে যার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভীষণ ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র
তখন আমাদেরকে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থা হতে সহায়তা প্রদান করা হয়। এই সেবা কার কাছ থেকে কীভাবে পাওয়া যায় সেসব তথ্যসমৃদ্ধ উপকরণ তৈরি করে আমাদের বিদ্যালয়ের একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র বানাব।
এই সেশনে আমরা যা শিখব তা ঠিক পরের মুহূর্ত থেকেই তোমাদের বাস্তবজীবনে হুবহু কাজে লাগবে। শুধু তাই নয়, আমরা যদি এই বিষয়টি ঠিকমতো শিখতে পারি তাহলে নিজেদের চেয়ে বয়সে বড় মানুষদেরও বিপদে- আপদে সাহায্য করে সেবা দিতে পারি। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
জরুরি সেবার মাধ্যম
ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে জরুরি সেবা কীভাবে পেতে পারি তা জানার আগে আমরা জেনে নিতে পারি ডিজিটাল মাধ্যম ছাড়াও কী করে জরুরি সেবা পাওয়া যায়।
জরুরি সেবার প্রয়োজন হলে প্রথমেই আমাদের আশপাশে যারা আছেন যেমন শিক্ষক, অভিভাবক বা অন্য কোনো ব্যক্তির সহায়তা নিতে পারি। কোনো কোনো এলাকায় স্বেচ্ছাসেবক বা এমন কোনো ব্যক্তি থাকেন যিনি কোনো বিপদে সবচেয়ে আগে এগিয়ে আসেন। আমাদের বিদ্যালয়ের স্কাউট, গার্লস গাইড সদস্যদের কাছ থেকেও কোনো কোনো জরুরি সেবা পাওয়া যায়।
কেউ কোনো আঘাত বা অসুস্থ হলে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা বা শুশ্রূষা পাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে ফার্স্ট এইড বক্স থাকে। এটা এক ধরনের জরুরি সেবা। যতক্ষণ পর্যন্ত বাইরের কোনো সেবা না পাওয়া যায় ততক্ষণ এই ফার্স্ট এইড বক্সের মাধ্যমে প্রাথমিক সেবা দেওয়া হয়। ঠিক একইভাবে আমাদের জরুরি প্রয়োজনে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করে সেবা নেওয়া যায়। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
নিচের চারটি ছবিতে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি?

জরুরি সেবা অনেক সময় জীবনে এমন অনেক দুর্ঘটনা ঘটে যার জন্য আমরা প্রস্তুত থাকি না। আর সাথে সাথে পদক্ষেপ না নিলে আমাদের অনেক বিপদ হয়ে যেতে পারে, তখন অন্যের সহায়তা প্রয়োজন হয়। এই সহায়তা সাধারণত সরকারি কোনো সেবা প্রতিষ্ঠান হতে পাই। কখনও কখনও সেসব সংস্থা থেকে তথ্য নিয়ে ও আমরা সেবা নিতে পারি। এই সেবাগুলো নেওয়ার উপায়গুলো আমরা কীভাবে জানতে পারি তাও বিভিন্ন মাধ্যম হতে আমরা জানি। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
অর্থাৎ যখনই কোনো দুর্ঘটনা ঘটে সাথে সাথে আমরা সরকারের কোনো সংস্থা হতে সহায়তা পেতে পারি। আমরা কি এ রকম আরও কিছু জরুরি সেবার নাম বলতে পারব? নিচের ঘরে এমন কয়েকটি সেবার নাম লিখি…

‘এই নামগুলো হতে একটি করে নাম আমরা কয়েকজন বোর্ডে লিখে আসি।’ একই জরুরি সেবা পুনরায় লিখব না ।
সকল জরুরি সেবাই কি আমাদের এলাকায় পাওয়া যাবে? এলাকা অনুযায়ী জরুরি সেবার ধরনও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। যেমন শহরে আগুন লাগলে আমরা ফায়ার সার্ভিসের সেবা পেতে পারি, কিন্তু গ্রামে কোনো ঘরে বা বাজারে আগুন লাগলে ভিন্নভাবে সেবা পাব। এই বিষয়টি নিয়ে এখন আমরা একটি কাজ করব। বোর্ডে লেখা জরুরি সেবার তালিকা হতে আমরা নিচের ছকে এলাকা অনুযায়ী জরুরি সেবার তালিকা তৈরি করব। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
শহর | গ্রাম |
---|---|
আমরা কয়েকজন এই তালিকাটি শ্রেণিতে উপস্থাপন করে দেখি তাদের সাথে আমার তৈরি তালিকাটি মিলল কিনা। উপস্থাপন শেষ হলে অন্যের থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো আমার বইয়ের ছকে লিখে রাখি। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
সেশন ২ : জরুরি সেবা পাওয়ার ডিজিটাল মাধ্যম চিহ্নিত করা
গত সেশনে আমরা অনেকগুলো জরুরি সেবার নাম জেনেছি। এখন সেই সেবাগুলো কোন কোন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে পাওয়া যায় তা বের করব। চলো আমরা পরের পাতায় ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণ করি:



ওপরের ঘটনাগুলো থেকে আমরা বুঝতে পারলাম জরুরি সময়ে আমাদের কোথায় যোগাযোগ করতে হবে। প্রতিটি ঘটনাই কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন, প্রতিটি ঘটনাই আমাদের জীবনে আসতে পারে। এখানে কিছু কিছু ঘটনায় কল সেন্টারের নম্বর উল্লেখ আছে, শিক্ষকের সহায়তায় সবগুলো কল সেন্টারের নম্বরগুলো সংগ্রহ করে একটি তালিকা তৈরি করি।
আমাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি সেবা পাওয়ার জন্য এই নম্বরগুলো হাতের কাছে রাখা উচিত। এজন্য সবগুলো গুরুত্বপূর্ণ নম্বর আমরা নিচের ছকে লিখে রাখি…
ক্রম | জরুরি সেবার নাম | জরুরি সেবা পাওয়ার নম্বর |
---|---|---|
১। | জাতীয় জরুরি কল সেন্টার | ৯৯৯ |
২। | ||
৩। | ||
৪। | ||
৫। | ||
৬। | ||
৭। | ||
৮। |
এবার চলো আমরা একটু ভাবি আমাদের আশপাশে বা নিজের জীবনে কয়েক দিনের মধ্যে এমন কী কী ঘটনা ঘটেছে যেগুলোর সময় জরুরি অবস্থার ফোন নম্বরগুলো জানা থাকলে আমার অনেক উপকার হতো। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
একটি ব্যাপার মনে রাখতে হবে, জরুরি অবস্থা অনেক সময় মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপারেও তৈরি হতে পারে। এমন কোনো ঘটনা যদি থাকে যেটি আমি অন্যকে জানাতে চাই না, তাহলে সেটি নিচের ছকে লেখার প্রয়োজন নেই।
জরুলি ঘটনা | কোন জরুরি নম্বরে ফোন করলে ভালো হতো? |
---|---|
সেশন-৩ : জরুরি সেবা প্রাপ্তির ধাপসমূহ অনুসন্ধান
জরুরি সেবা পাওয়ার জন্য আমাদেরকে কল সেন্টারে যোগাযোগ করে আমরা যে ব্যাপারে সাহায্য চাইছি সে সম্পর্কে সঠিক তথ্য ও অবস্থান জানাতে হয়। অনেক সময় তথ্য গ্রহণকারী বিস্তারিত অনেক কিছু জানতে চান।
এই যোগাযোগটা আমাদের সঠিকভাবে না করলে সহায়তা পেতে দেরি হতে পারে বা সহায়তায় বিড়ম্বনাও তৈরি হতে পারে। তাই আজকের সেশনে সঠিকভাবে কী করে যোগাযোগ স্থাপন করতে হয়, তা নিয়ে কিছু কাজ করব। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
নিচের ছবিতে কী দেখতে পাচ্ছি? এখানে কার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে? কী সমস্যা নিয়ে সেবা চাওয়া হতে পারে?

ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে জরুরি সেবার জন্য যোগাযোগে কখনও কখনও খরচ করতে হয়। জরুরি অবস্থা অনেক ধরনের হতে পারে। যেমন: ঘরে আগুন লেগেছে, সড়ক দুর্ঘটনা, ভুল ওষুধ খেয়ে ফেলা, কীটনাশক খেয়ে ফেলা, কারও শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্ট হওয়া, বুকে ব্যথা হওয়া, হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাওয়া, খাবার আটকে শ্বাসরোধ হয়ে যাওয়া, কোনো অপরাধ ঘটতে দেখা ইত্যাদি। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
আবার কখনও কখনও কোনো বিষয়ে তথ্য জানাও জরুরি হয়ে পড়ে। যেমন আবহাওয়া বার্তা, কৃষি, স্বাস্থ্য ইত্যাদি তথ্য জানার প্রয়োজন পড়ে। কেউ যখন কোনো বিপদে পড়ে জরুরি নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইতে কখনোই লজ্জা করা বা ভয় পাওয়া উচিত নয়। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।
আমরা যদিও অপরিচিত মানুষকে নিজের নাম, ঠিকানা বা অন্য ব্যক্তিগত তথ্য দিই না, কিন্তু জরুরি সেবাদানকারী প্রতিনিধিকে এসব তথ্য দেওয়া নিরাপদ এবং বাধ্যতামূলক। জরুরি সেবার নম্বরগুলো জাতীয় সম্পদ। এসব নম্বরে দুষ্টুমি করে ফোন করা উচিত নয়। শুধু তাই নয়, অপ্রয়োজনে ফোন করলে আইনে শাস্তির বিধানও আছে।
সব জরুরি নম্বর ও তার সেবার ধরনগুলো একটি পোস্টারে লিখে সেটি বিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে সবাই যেন দেখতে পায় সেভাবে লিখে রাখা উচিত। এছাড়া মাঝে মধ্যে খেলাচ্ছলে বন্ধুদের মধ্যে জরুরি সেবায় যোগাযোগ নম্বর মুখস্থ করার প্রতিযোগিতা করলে জরুরি সময়ে সেই চৰ্চা কাজে আসতে পারে। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
এবার আমরা দলে শিখব কীভাবে ফোনে সুন্দর করে গুছিয়ে সাহায্য চাইতে হয় । যদি এর মধ্যে কোনো চরিত্র পছন্দ না হয় তাহলে বেশি সময় না নিয়ে নিজের পছন্দমতো একটি চরিত্র বানিয়ে নেব। চরিত্রটি বাস্তবসম্মত হতে হবে।
আমরা নিচের চরিত্রগুলো থেকে একেক দল একটি নিয়ে কথোপকথন লিখব।
■ জাতীয় দুর্যোগসেবার কল সেন্টারের পুলিশ কর্মকর্তা
■ একজন দুর্ঘটনাকবলিত যাত্ৰী
■ কৃষি জরুরি সেবার কল সেন্টারের কর্মকর্তা
■ একজন কৃষক
■ নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধী কল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা
■ বাল্যবিবাহের শিকার একজন ছাত্রী
■ স্বাস্থ্য বাতায়ন কল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা
■ একজন রোগী
■ আগাম আবহাওয়াবার্তা কলসেন্টারের একজন কর্মকর্তা
■ প্রবাসবন্ধু কল সেন্টারের একজন কর্মকর্তা
■ একজন প্রবাসী শ্রমিক
জরুরি সেবার নম্বরে কল করলে অনেক সময় নির্দিষ্ট সেবার জন্য নির্দিষ্ট প্রতিনিধির নিকট যোগাযোগ করতে ০ বা ১ বা ২ ইত্যাদি নম্বরে চাপ দিতে বলা হয়। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
তাহলে আসো, আমরা এমন একটি যোগাযোগ করতে কথোপকথন কেমন হতে পারে তা লিখি…
প্রতিনিধি: শুভ সকাল। ৯৯৯ থেকে আমি প্রলয় সাহা বলছি। আপনার নাম, ঠিকানা আর যোগাযোগের নম্বরটি বলবেন কি? আমি: জি, আমি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার মানশ্রী গ্রাম থেকে দিনিয়াত জেরিন বলছি। আমার যোগাযোগ নম্বর হলো ... প্ৰতিনিধি :_______________________________________________________________________________ আমি:__________________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি :_______________________________________________________________________________ আমি:_______________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি:_______________________________________________________________________________ আমি :_______________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি :প্রতিনিধি: শুভ সকাল। ৯৯৯ থেকে আমি প্রলয় সাহা বলছি। আপনার নাম, ঠিকানা আর যোগাযোগের নম্বরটি বলবেন কি? আমি: জি, আমি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার মানশ্রী গ্রাম থেকে দিনিয়াত জেরিন বলছি। আমার যোগাযোগ নম্বর হলো ... প্ৰতিনিধি :_______________________________________________________________________________ আমি:__________________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি :_______________________________________________________________________________ আমি:__________________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি:_______________________________________________________________________________ আমি :_________________________________________________________________________________ প্ৰতিনিধি :_______________________________________________________________________________
এবার শিক্ষক যখন নিচের প্রশ্নগুলো করবেন তখন মিলিয়ে নেব আমাদের কথোপকথনটিতে সেই সকল ক্ষেত্রগুলো এসেছে কিনা। এখানে ‘পুরোপুরি’ অর্থ হলো আমি পুরোপুরি সন্তুষ্ট, ‘আংশিক’ অর্থ হল আমি আংশিক সন্তুষ্ট এবং ‘পাইনি’ অর্থ হলো আমি একদমই সন্তুষ্ট নই। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে টিক ( √ ) চিহ্ন বসাব।(চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
ক্রম | ক্ষেত্র | পুরোপুরি | আংশিক | পাইনি |
---|---|---|---|---|
১। | কী সাহায্য প্রয়োজন সেটি বোঝা গেছে | |||
২। | দরকারি তথ্য পাওয়া গেছে | |||
৩। | দ্রুত সমাধান পাওয়া গেছে | |||
৪। | সেবা গ্রহণের সব ধাপ সম্পন্ন হয়েছে |
সেশন-৪ : জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র স্থাপনে উপকরণ প্রস্তুত
আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র তৈরি করতে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। এজন্য প্রথমেই আমাদেরকে উপকরণ তৈরি করতে হবে। জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্রের জন্য মজার করে কিছু পোস্টার বানাতে হবে। আমাদের শিক্ষক যেকোনো দুটি জরুরি সেবা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দেবেন। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
এই দুটি জরুরি সেবা কী করে পাওয়া যাবে তার জন্য আমরা কয়েকটি পোস্টার তৈরি করব। পোস্টার বানানোর জন্য আমরা আমাদের পূর্বের সেশন হতে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাব। আগের সেশনগুলোতে জরুরি সেবা চিহ্নিত করেছি, জরুরি সেবার নম্বরগুলো পেয়েছি এবং জরুরি সেবা পাওয়ার জন্য কীভাবে যোগাযোগ করতে হয় তা জেনেছি।
আমাদের তথ্যকেন্দ্রের জন্য মূলত এই বিষয়গুলো উপস্থাপন করার জন্য পোস্টার তৈরি করব। আমাদের শিক্ষক আট (০৮)টি দল করে দেবেন। প্রত্যেক দলের জন্য শিক্ষকের সহায়তায় একজন সহায়তাকারী প্রত্যেক দল একটি করে পোস্টার তৈরি করব। দুটি জরুরি সেবার জন্য চারটি করে মোট আটটি পোস্টার বানাব। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
আমাদের বইয়ের/ অভিজ্ঞতা অধ্যায় শেষে পোস্টার বা লিফলেট লেখার জন্য খালি পৃষ্ঠা আছে, যেটি ব্যবহার করে চারটি পৃষ্ঠা মিলিয়ে একটি পোস্টার তৈরি করব। কোন দল কোন জরুরি সেবার কী তথ্য নিয়ে পোস্টার বানাব তা আমাদের শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসারে করব। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
আমরা যদি কাউকে লিখিত অনুমতি দিই তাহলে সে এই পোস্টারের একটি কপি বা অনুলিপি নিজের প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করতে পারবে। তাই এই পোস্টারগুলোর নিচের কোনায় ছোট করে আমরা মেধাস্বত্ব উল্লেখ করে দেব।

পোস্টারে যে তথ্যগুলো থাকতে হবে…
■ জরুরি সেবার নাম
■ জরুরি সেবার নম্বর
■ জরুরি সেবা প্রাপ্তির উপায় (ধাপ অনুসারে )
■ জরুরি সেবা পেতে কী কী বিষয় মনে রাখা জরুরি
■ বুকলেট/তথ্যবই (বইয়ে পূরণকৃত তথ্যগুলো নিয়ে একটি বুকলেট প্রণয়ন যা জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্রে থাকবে)
কিছু কিছু জরুরি সেবা সরাসরি প্রতিনিধির সাথে কথা বলে পাওয়া যায়, আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে রেকর্ডেড ভয়েসের মাধ্যমে তথ্য পাওয়া যায়। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
দলের একেকজন প্রত্যেকের বইয়ের পৃষ্ঠাতে লিখে বা এঁকে সেগুলো কয়েকটি জোড়া দিয়ে একেকটি পোস্টার বানাব। দলে পরিকল্পনা করে নেব কে কী তৈরি করব। একেক দল একেকটি ধারণা নিয়ে পোস্টার তৈরি করব। সুযোগ থাকলে পোস্টার তৈরির কাজটি প্রিন্ট করেও করতে পারি। বিদ্যালয় বা অন্য কোথাও হতে প্রিন্ট নিয়ে কাজটি করতে পারি।
তবে মনে রাখব পোস্টারটি যেন তথ্যসমৃদ্ধ ও আকর্ষণীয় হয়। তথ্যগুলো কালো কালি ও মোটা করে বড় আকারে লিখব, যেন তা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। যেহেতু প্রতিটি দল একটি পোস্টার বানাবে, তাই সবচেয়ে ভালো চারটি পৃষ্ঠার আঁকা/লেখা সকলের সম্মতিতে নির্বাচন করতে হবে। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
এক্ষেত্রে আমরা শিক্ষকের মতামত নেব। সবাই চেষ্টা করব ভালো করে আঁকা বা লেখার। কারোটা বাদ পড়লেও মন খারাপ করা যাবে না, মনে রাখতে হবে দলের কাজ ভালো আর সুন্দর হওয়া মানে আমার কাজটাই সুন্দর হওয়া।
আমাদের এই কাজটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্রটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে দিয়ে উদ্বোধন করা হবে। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
এ জন্য এই সেশনের শেষে আমাদের শিক্ষকের সাথে কয়েকজন মিলে প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে বিষয়টি অবগত করব। প্রধান শিক্ষককে অনুরোধ করব যেন তিনি সভাপতি মহোদয়কে আগামী সেশনের তারিখ ও সময় জানিয়ে দেন। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
সেশন ৫ : জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন
আমাদের শিক্ষকের সহায়তায় ও প্রধান শিক্ষকের অনুমোদন সাপেক্ষে জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্রের জন্য বিদ্যালয়ের একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্বাচন করব। স্থানটি এমন হবে যেন সকলের দৃষ্টিগোচরে পড়ে। দলের সবার উপকরণ তৈরি হয়ে গেলে দলের সহায়তাকারী বন্ধুর কাছে জমা রাখব।
সকল দলের সহায়তাকারী বন্ধুরা বিরতির সময় বা ছুটির পর শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় নিয়ে তথ্যকেন্দ্রে পোস্টারগুলো লাগাব। যেহেতু আমাদের মোট পোস্টার সংখ্যা আট (০৮)টি, তাই চারটি জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্রে আর চারটি শ্রেণিকক্ষের একটি নির্দিষ্ট স্থানে লাগাব। পোস্টারগুলো লাগানোর সময় খেয়াল রাখব যেন সেগুলোও সুন্দরভাবে লাগানো হয়। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র স্থাপনের কাজ শেষ হলে তা উদ্বোধন করার জন্য প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মহোদয়কে উদ্বোধনের জন্য আহ্বান করব। উদ্বোধনের সময় আমাদের সকলকে খুবই সুশৃঙ্খল থাকতে হবে। অন্যান্য শ্রেণির শিখন শেখানোয় যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেভাবে আমাদের আওয়াজ করতে হবে।

বাড়ির কাজ: সংখ্যা ধাঁধা মিলিয়ে জরুরি সেবার নম্বর খুঁজে বের করি

শ্রেণির বাইরের কাজ :
এই সেশনে আমরা ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে কীভাবে জরুরি সেবা পাওয়া যায় তার উপায় জানলাম। এখন বাস্তবে জরুরি সেবা পাওয়ার জন্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে যোগাযোগ স্থাপন করব। আমরা জেনেছি যে অহেতুক জরুরি নম্বরগুলোতে কল করা যাবে না, তাই শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় তথ্য জানার জন্য আমরা জরুরি সেবা নেব।
কারও কোনো জরুরি তথ্য জানার না থাকলে ‘আবহাওয়ার আগাম বার্তা’ কল সেন্টার থেকে জরুরি তথ্য জেনে নিয়ে নিচের তথ্য ছকটি পূরণ করতে হবে। পরবর্তী ক্লাসে শিক্ষক এটি দেখে মূল্যায়ন করবেন। (চলো সাজাই জরুরি সেবা তথ্যকেন্দ্র)
সেবার নাম | জরুরি তথ্যসেবা গ্রহণের নম্বর | যে তথ্যের জন্য কল করা হয়েছে | তথ্য প্রদানকারী কে ছিলেন | যে তথ্য পাওয়া গেল |
---|---|---|---|---|
- অরো পড়ুন : শিখনের জন্য নেটওয়ার্কিং