এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই

২০২৩ সালের সপ্তম শ্রেণির বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন অ্যাসাইনমেন্ট এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই শীর্ষক আলোচনা করবো আজ। এখানে থাকবে কিভাবে আমার ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা পাঠ্য বইয়ের বার্ষিক পরীক্ষার এসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ সংক্রান্ত সকল তথ্য।

সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা বাৎসরিক মূল্যায়নের প্রথম দিন শিক্ষার্থীরা তাদের এলাকার বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিত করবেন এবং সেগুলো সমাধানে হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিবে।

এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি

সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা বিষয়ের বার্ষিক মূল্যায়নের প্রথম দিনের অ্যাসাইনমেন্ট এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি শীর্ষক কাজটি করতে হবে। এখানে এনসিটিবির প্রদত্ত সংকেত মোতাবেক নিম্মোক্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবো-

ক্রমিকসংকেত
০১নিজ এলাকায় বিশেষ কোনো রোগ, যেমন-ডেঙ্গু বা স্বাস্থ্যবিষয়ক যেকোনো সমস্যা সম্পর্কে সচেতনতামূলক কার্যক্রম;
০২হাত ধোয়া ও সঠিক উপায়ে দাঁত ব্রাশের নিয়ম বিষয়ক কর্মসূচি;
০৩ধুমপানের কুফল সম্পর্কিত ক্যাম্পেইন;
০৪অপরিচ্ছন্নতার কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকি;
০৫প্রাথমিক চিকিৎসাধর্মী সচেতনতা;
০৬প্রবীণ/প্রতিবন্ধীদের স্বাস্থ্যসেবা (জ্বর মাপা, নখ কাটার নিয়ম, ওরস্যালাইন বানানো ইত্যাদি) অনুশীলন করানো;
০৭এলাকার বড়দের/বৃদ্ধ/শিশুদের নিয়ে উঠানে বা ছাদে বসে সচেতনতামূলক কথা বলা, ভিডিও দেখানো, আলোচনা করা, হাতে লেখা লিফলেট বিতরণ, হাতে আঁকা পোস্টার টানানো ইত্যাদি।
এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই
এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই
এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই

দলগতভাবে সামাজিক সমস্যা খুঁজে সমাধান বের করা (৪০ মিনিট)

২০২৩ সালের ৭ম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা বাৎসরিক মূল্যায়ন কার্যক্রমের প্রথম ৪০ মিনিটে দলগতভাবে সামাজিক সমস্যা খুঁজে সমাধান বের করবো।

কাজ-১: নিজ নিজ এলাকায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা

এলাকায় সংক্রামক রোগের তালিকা:

রোগ বা সমস্যার ধরণবিস্তারিত
মশাবাহিত রোগম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, জিকা, ফিলিপাইন্স ডেঙ্গু
পানিবাহিত রোগডায়রিয়া, আমাশয়, টাইফয়েড, জন্ডিস
বায়ুবাহিত রোগনিউমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, সার্স, টিবি
অন্যান্য সংক্রামক রোগহেপাটাইটিস, HIV/AIDS, ইবোলা, করোনাভাইরাস
সংক্রামক রোগের তালিকা: এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এলাকায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা নিম্নরূপ:

১. স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগের অভাব: বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম। এসব এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বিভাগীয় হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রয়েছে। তবে এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সংখ্যা এবং মান গ্রামীণ এলাকার জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট নয়। এছাড়াও, এসব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে দক্ষ জনবলের অভাব রয়েছে।

২. স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল: বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যয়বহুল। এসব এলাকার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র, তাই তারা স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে অক্ষম।

৩. অশিক্ষা ও কুসংস্কার: অশিক্ষা ও কুসংস্কার স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে। অনেক মানুষ স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়। এছাড়াও, অনেক মানুষ রোগের চিকিৎসার জন্য কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকের কাছে যায়।

৪. স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অভাব: বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের অভাব রয়েছে। এসব এলাকায় অপরিষ্কার পানি, অপরিষ্কার খাবার, অপর্যাপ্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, মশার উপদ্রব ইত্যাদি কারণে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।

৫. পরিবেশ দূষণ: পরিবেশ দূষণও স্বাস্থ্য সমস্যার একটি বড় কারণ। বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় শিল্পকারখানা, কৃষিক্ষেত্র এবং যানবাহনের ধোঁয়া থেকে পরিবেশ দূষণ হয়। এসব দূষণ থেকে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হয়।

উপরোক্ত সমস্যাগুলোর কারণে বাংলাদেশের গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্য সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান, জনসাধারণ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যরা একসাথে কাজ করতে হবে।

কাজ-২: সমস্যা সমাধানের জন্য যেসকল উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে

উপরোক্ত এলাকার প্রেক্ষাপটে এলাকায় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যার তালিকা থেকে সহজে এবং তোমাদের পক্ষে উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব, এমন একটি সমস্যা বেছে নিবে। তোমাদের সুবিদার্থে এখানে সবগুলো সমস্যার সম্ভব্য সমাধান দেওয়া হল।

মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:

মশার উৎস ধ্বংস: মশার উৎস ধ্বংস করা হল মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। মশার উৎস হল জমে থাকা পানি। তাই যেখানেই জমে থাকা পানি থাকে, সেখানেই মশার উৎপত্তি হতে পারে।

জমে থাকা পানি ধ্বংস করতে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

বাড়ির আঙিনা, ছাদ, উঠান, বাগান ইত্যাদিতে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা।
ফুলের টব, গাছের টব, বালতি, ড্রাম, চুলা ইত্যাদিতে জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া।
ছাদ বা বারান্দায় রেখে দেওয়া জিনিসপত্রের নিচে জমে থাকা পানি ফেলে দেওয়া।
ভাঙা কল, পাইপ ইত্যাদির সংস্কার করা।
এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই

মশার বিস্তার নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:

মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা।
মশার কামড় থেকে রক্ষা পেতে পোশাক পরানো।
মশার জাল ব্যবহার করা।
মশা মারার ওষুধ বা কীটনাশক ছিটানো।

জনসচেতনতা বৃদ্ধি: মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি। জনসাধারণকে মশাবাহিত রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ, প্রতিরোধের উপায় এবং চিকিৎসা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

১. স্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তির সুযোগ বৃদ্ধি: গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সংখ্যা ও মান বৃদ্ধি করতে হবে। এছাড়াও, দক্ষ জনবলের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে।

২. স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় হ্রাস: স্বাস্থ্যসেবা ব্যয় হ্রাস করতে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও, জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণের গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

৩. অশিক্ষা ও কুসংস্কার দূরীকরণ: অশিক্ষা ও কুসংস্কার দূরীকরণে সরকার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং জনসাধারণকে একসাথে কাজ করতে হবে।

৪. স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণ: গ্রামীণ এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিতকরণে সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও, জনসাধারণকে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

৫. পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ: পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার এবং শিল্পকারখানাগুলোকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়াও, জনসাধারণকে পরিবেশ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে।

খ) চিহ্নিত সমস্যার সমাধানের নির্দেশনা (১০ মিনিট)

বাড়িতে শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে দলগতভাবে অথবা এককভাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী সমস্যাটির সমাধানের উদ্যোগ বাস্তবায়নে কাজ করবে। যে দল/শিক্ষার্থী যে এলাকায় কাজটি সম্পন্ন করেছে, সে এলাকার অংশীজনদের মধ্য থেকে যেকোনো দুইজনের স্বাক্ষর ও মতামত সংগ্রহ করবে।

গ) হেলথ ক্যাম্পের জন্য প্রস্তুতি (৩০ মিনিট)

মূল্যায়নের ৩য় দিন শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দলকে হেলথ ক্যাম্পের জন্য স্টল তৈরি করতে হবে। আমরা এবার কিভাবে সপ্তম শ্রেণি জীবন ও জীবিকা বিষয়ের বাৎসরিক মূল্যায়নের স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা করবো সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

আমরা এই পর্যায়ে সপ্তম শ্রেণির জীবন ও জীবিকা পাঠ্য বইয়ের বার্ষিক মূল্যায়নের তৃতীয় অ্যাসাইনমেন্ট হেলথ ক্যাম্পের আয়োজন করি সংক্রান্ত কার্যক্রমে পরিকল্পনা গ্রহণ করবো।

অধ্যায়ন ডট কম এর সকল আপডেট সবার আগে পাওয়ার জন্য আমাদের ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন, ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন।

সপ্তম শ্রেণি ২০২৩ বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়ন সকল বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট

ক্রমবিষয়ের নামঅ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম
১.বাংলা
২.ইংরেজি
৩.গণিত
৪.ডিজিটাল প্রযুক্তি
৫.শিল্প ও সংস্কৃতি
৬.ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান
৭.স্বাস্থ্য সুরক্ষা
৮.জীবন ও জীবিকা১.
৯.ইসলাম শিক্ষা
১০.বিজ্ঞান

3 thoughts on “এলাকাভিত্তিক সামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজি এবং হেলথ ক্যাম্পের প্রস্তুতি নিই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: এই কনটেন্ট কপি করা যাবেনা! অন্য কোনো উপায়ে কপি করা থেকে বিরত থাকুন!!!