বলতে পার আমাদের প্রতিবেশী কারা? তাদের সম্পর্কে কি তোমার জানতে ইচ্ছে করে না? শুধু মানুষ নয় কিন্তু, বরং আমাদের চারপাশে যে এত রকম গাছ, পাখি, পশু, কীটপতঙ্গরা রয়েছে তারাও তো আমাদের প্রতিবেশী! তাদের সম্পর্কেও তো আমরা জানতে চাই! এবার আমাদের এইসব প্রতিবেশীদের খুঁজে দেখার পালা!

প্রথম ও দ্বিতীয় সেশন

আচ্ছা তোমার বাসায়, স্কুলে, বা আশেপাশে কত ধরনের জীব আছে কখনো খেয়াল করেছো?\ শুধু পাখির কথাই ধরা যাক, কত ধরনের পাখি
আসলে তোমাদের এলাকায় আছে
তা কি কখনো লক্ষ করে দেখেছো?
একটু ভেবে দেখো তো! একই কথা বলা
চলে চারপেয়ে পশু, পোকা, এমনকি গাছের বেলাতেও! কতরকম ফুলের
গাছের দেখা তোমাদের আশপাশেই মেলে, কতরকম সবজি তোমার এলাকায় চাষ করা হয় তাও কি কখনো সেভাবে খেয়াল করেছো?
আমাদের যারা প্রতিবেশী ।এই শিখন অভিজ্ঞতার শুরুতেই আমরা এই কাজটি করে নিই কী বলো? আগে নিজেরা ছোট ছোট দলে বসে মনে করার চেষ্টা করো, চলতে ফিরতে কত ধরনের জীব তোমাদের চোখে পড়েছে? * এবার নিজেদের খুঁজে দেখার পালা! এখন সবাই যদি সব ধরনের জীব খুঁজতে শুরু করো তাহলে তো অনেক সময় লেগে যাবে, তাই না? দলে ভাগ হয়ে কাজটা করতে বরং সুবিধা হবে।
আমাদের যারা প্রতিবেশী
শিক্ষকের সহযোগিতায় তোমরা কয়েকটি দলে ভাগ হয়ে যাও, প্রতিটি দল ঠিক করে নাও তোমরা কোন ধরনের জীব অনুসন্ধান করবে। কোন দল হয়ত শুধু কত ধরনের পাখি তোমাদের এলাকায় আছে তা নোট করবে, আরেক দল হয়ত শুধু কত রকম পোকা মাকড় আছে তার তালিকা করবে। স্কুলের চৌহদ্দি থেকেই কাজটা শুরু করা যাক তাহলে?
কাজ শুরু করার আগে একটা চমৎকার নাম বেছে নাও তোমরা! ধরো, তোমাদের দলের কাজ হলো পোকার কত ধরন আছে তার তালিকা তৈরি করা। দলের নাম তাহলে কী হতে পারে? ‘ফড়িং’ নাকি ‘পিপীলিকা’? একটা নাম সবাই আলোচনা করে চূড়ান্ত করে ফেলো!

৩০ মিনিট সময় নিয়ে স্কুলের আশেপাশের এলাকা ভালো করে খুঁজে তালিকা তৈরি করো। চাইলে পুরো দল একসাথে না গিয়ে জোড়ায় ভাগ হয়েও খুঁজতে পারো!
কাজ শেষ? তাহলে পরের পৃষ্ঠার ছকে তোমাদের দল যতগুলো জীবের দেখা পেয়েছে তাদের নাম টুকে ফেলো!
দলের নাম:
জীবের ধরন | জীবের নাম |
উদাহরণস্বরূপ: (গাছ) ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. ………………………………….. | উদাহরণস্বরূপ- আম গাছ, বরই গাছ, ইত্যাদি… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… ………………………………………………………………………………………… |
শুধু স্কুলের আশেপাশে দেখলেই তো সব প্রতিবেশীদের চেনা হবে না! এবার তোমাদের কাজ হবে নিজ নিজ বাড়ির আশেপাশে কত ধরনের জীব বাস করে তা খুঁজে বের করা। সেজন্য চাইলে বাবা মা, কিংবা ভাই বোনদের সাহায্যও নিতে পারো!
তৃতীয় ও চতুর্থ সেশন

নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে তোমার বন্ধুরা বাড়ীর আশেপাশে কোন কোন জীবের দেখা পেল! তাদেরকে দেখাও তুমি কত রকম জীবের দেখা পেয়েছো। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
দলে আলোচনা করে সবার পাওয়া তথ্য একত্র করে একটা ছক তৈরি করে ফেলো তাহলে! এবার দলের কাজ তো ক্লাসের বাকিদের সাথেও শেয়ার করা চাই!
তোমরা সম্ভব হলে পোস্টার কাগজ, বা অন্য যেকোন উপায়ে সবার কাছে তোমার দলের পাওয়া তথ্য পৌঁছে দাও।
সব দলের কাজ দেখার পরে অনেকগুলো তালিকা তো পাওয়া গেল! এখন এই বড় তালিকায় তোমার সবচেয়ে প্রিয় জীব কোনটি? তুমি কি এই জীব সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চাও?
ক্লাসের সবাই যদি আলাদা আলদা জীব বেছে নাও আর তাদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত তথ্য খুঁজে নিয়ে আসো তাহলে কী দারুণ ব্যাপার ঘটবে ভাবো তো! তোমাদের অঞ্চলের বেশিরভাগ জীব সম্পর্কেই জানা হয়ে যাবে তাহলে!
* শিক্ষকের সহায়তায় কে কোন জীব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে নাও।
এখন তোমার বন্ধুদের সাথে আলাপ করে দেখো, কোনো জীব সম্পর্কে জানতে হলে তার কোন কোন তথ্য সবচেয়ে বেশি কাজে লাগবে? আমাদের যারা প্রতিবেশী।
কী ধরনের তথ্য তোমরা পর্যবেক্ষণ করে খুঁজে বের করতে পারবে? যেমন- কোনো জীবের খাদ্যাভ্যাস তার একটি বৈশিষ্ট্য হতে পারে। আর কী কী বৈশিষ্ট্য তোমরা দেখবে সবাই আলোচনা করে একটা তালিকা তৈরি করো। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
এবার পাঁচ বা সাতদিন সময় নাও তোমার বেছে নেয়া জীব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার জন্য।
জীবের নাম: | |||
শারীরিক গঠন | খাদ্যাভ্যাস | বাসার ধরন | বিশেষ কোনো বৈশিষ্ট্য |
পঞ্চম ও ষষ্ঠ সেশন
এই এক সপ্তাহ যেহেতু তোমার বেছে নেয়া জীবকে পর্যবেক্ষণ করছো, সময়টা আরেকটু কাজে লাগানো যাক! জীবের ক্ষুদ্রতম একক কোষ, তা হয়ত তোমরা কেউ কেউ ইতোমধ্যেই জান। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
এই এক সপ্তাহ কোষের গঠন ও কাজ, এবং বহুকোষী জীবের কোষসমূহ কীভাবে তাদের বৈশিষ্ট্য গড়ে তোলে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা তৈরিতে সময় নাও। পাশাপাশি এই আলোচনার সূত্র ধরে জীবের বৈশিষ্ট্য ও এর ভিত্তিতে জীবের শ্রেণিবিন্যাস কীভাবে করা হয় তাও দেখে নাও। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
সপ্তম, অষ্টম ও নবম সেশন

> এক সপ্তাহ ধরে যা যা তথ্য পেলে এবার দলের বাকিদের সাথে শেয়ার করে দেখো অন্যরা কী বলে। দলের অন্যরা যেসব জীব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে তাদের সাথে তোমার পাওয়া তথ্য তুলনা করে দেখো, জীবগুলোর মধ্যে সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য কী কী।
এবার অন্যান্য দলের কাজগুলোও দেখা জরুরি। ক্লাসে আলোচনার মাধ্যমে তারা যেসব জীব সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছে সে সম্পর্কেও জেনে নাও। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
ক একটা দারুণ ব্যাপার দেখেছো? তোমাদের ক্লাসের সবাই মিলে যা যা তথ্য নিয়ে এসেছ তা একত্র করলে তোমার এলাকায় কত রকম উদ্ভিদ বা প্রাণী আছে তার একটা বিস্তৃত চিত্র দেখা যাচ্ছে! কেমন হয় যদি এটা অন্যদেরকেও জানানোর ব্যবস্থা করা যায়?
আর সকল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা যদি একই কাজ করে তাহলে কিন্তু পুরো বাংলাদেশের শত শত উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পর্কে অনেক অনেক তথ্য জোগাড় করা হয়ে যাবে!! ভেবে দেখো কী অসাধারণ একটা কাজ হবে সেটা! আমাদের যারা প্রতিবেশী।
এই কাজের সূচনা হিসেবে তোমরা তোমাদের ক্লাসের সবার তথ্য এক করে একটা ক্যাটালগ বা তথ্যচার্ট করার উদ্যোগ নিতে পারো। সেজন্য আগে দলে বসে তোমাদের অনুসন্ধানী পাঠ বই থেকে ‘উদ্ভিদ, প্রাণী ও অণুজীব’ অধ্যায় থেকে কীভাবে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে জীবের শ্রেণিবিন্যাস করা হয় তা একটু পড়ে নাও।
এবার শিক্ষকসহ সকল সহপাঠীর সাথে আলোচনার মাধ্যমে কীভাবে এই ক্যাটালগ বা তথ্যচার্ট তৈরি করা যায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নাও। তোমাদের ক্যাটালগে বিভিন্ন জীব সম্পর্কে তথ্যগুলো কীভাবে থাকতে পারে তার একটা নমুনা অপর পৃষ্ঠায় দেয়া হলো, কিন্তু এভাবেই করতে হবে মোটেও এমন না। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
তোমাদের তালিকার সকল উদ্ভিদ ও প্রাণীর বৈশিষ্ট্যগুলো যেভাবে সাজিয়ে তোমরা উপস্থাপন করতে চাও সেভাবেই করবে, এটা একটা নমুনা মাত্র!

এবার স্কুলের সবাইকে কীভাবে এই ক্যাটালগ বা তথ্যচার্ট দেখানো যায় তা ভেবে বের করো। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করো। প্রয়োজনে শিক্ষকের সাহায্য নাও। আমাদের যারা প্রতিবেশী।
ফিরে দেখা
এই পুরো কাজটি তোমার কেমন লেগেছে?
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
এই কাজটি করতে গিয়ে নতুন কী শিখেছো যা আগে জানতে না?
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
……………………………………………………………………………………………………………………………
আরো পড়ুন : পিকনিক ! পিকনিক!!